খুলনার ডুমুরিয়ার খর্নিয়া ও শাহপুর হাট শহরতলি এলাকায় সবচেয়ে বৃহৎ কোরবানির পশু বিক্রির হাট। প্রতিবছর ঈদের আগে এই দুই হাটে খামারিদের কয়েকহাজার গরু বিক্রি হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এবার ১৫ জুলাই একদিন মাত্র হাটে গরু বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন খামারিরা। ওই হাটে গরু বিক্রি না হলে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হবে। একইভাবে খুলনার আঠারমাইল হাটে ১৯ জুলাই ও চুকনগর হাটে ২০ জুলাই একদিন মাত্র গরু বিক্রির সুযোগ রয়েছে। ফলে এক হাটেই গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারিরা। এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাল ১৫ জুলাই থেকে নগরীর জোড়াগেটে কোরবানির পশু বিক্রির হাট চালু করছে সিটি করপোরেশন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত হাটকে ঘিরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেলায় এবার ৫ হাজার ২১২ জন খামারি হাটে বিক্রির জন্য ৪৭ হাজার ৭৮৯টি পশু প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৫৬৮টি ষাঁড়, ২ হাজার ৩১৯টি বলদ, ২ হাজার ৪০৪টি গাভি, ১২ হাজার ২৩৯টি ছাগল, ২ হাজার ২৫০টি ভেড়া রয়েছে। জেলায় এবার পশু চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ৭৫ হাজার। গত বছর জেলায় কোরবানি হয়েছিল ৭৪ হাজার পশু। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রণজীতা চক্রবর্তী বলেন, খামারিরা জেলার অভ্যন্তরে যে পশু প্রস্তুত করেছেন তা’ দিয়ে চাহিদা মেটানো যাবে না। তবে প্রতিবছরের মতো আশপাশের জেলা থেকে হাটে পশু আনা হলে সংকট থাকবে না। জানা যায়, খুলনার ডুমুরিয়া, ফুলতলা, দিঘলিয়া, তেরখাদা দাকোপসহ বিভিন্ন এলাকায় খামারিরা শেষ সময়ে পশু লালনপালন ও মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ডুমুরিয়ার খর্নিয়ার খামারী মাসুদ শেখ জানান, অধিকাংশ গ্রামের মানুষ হাটে বিক্রির জন্য সারাবছর গরু লালনপালন করেন। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতিতে মাত্র একটা দিন গরু বিক্রির সুযোগ থাকছে। কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ফলে হাটে গরু বিক্রি না হলে তা নিয়ে অন্য হাটে যাতায়াতে বাড়তি খরচসহ ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। অনলাইনে গরু বিক্রির কথা বলা হলেও গ্রামের মানুষ এতে অভ্যস্ত নয়। এদিকে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আমিনুল ইসলাম মুন্না জানান, শহরের মধ্যে জোড়াগেটে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পশুর হাট বসবে। হাটে প্রবেশের ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে ও প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। বয়স্ক ও শিশুরা পশুর হাটে প্রবেশ করতে পারবে না।