মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খাদ্যমন্ত্রী

অবৈধভাবে মজুদ করলেই লাইসেন্স বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারিভাবে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমদানির চাল দেশে আসলেই দাম কমে যাবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, মিলাররা অবৈধভাবে চাল মজুদ করলে বা নিয়ম না মানলে মিল মালিকদের মিলিং লাইসেন্স বাতিল করা হবে। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চাল আমদানিতে ট্যাক্স সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। ২০১৮ সালে ধানের দাম অনেক কমে যাওয়ায় কৃষক বাঁচাতে এই ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছিল। বেসরকারিভাবে চাল আমদানি করতে আগ্রহীরা ২৫ আগস্টের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন। আশা করি আমদানির চাল কিছুটা এসে ঢুকলেও তখন এর প্রভাব পড়বে, দাম কমবে। যারা ধান বা চাল মজুদ করে রেখেছে তারা সেগুলো বাজারে ছেড়ে দেবে।

আমদানির চাল কবে নাগাদ বাজারে আসতে পারে- এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এলসি খুলে আসতে দু-তিন সপ্তাহ তো লাগেই। চাল আমদানি শুল্ক কমানোর এসআরও জারির পরই নওগাঁতে প্রতি বস্তায় চালের দাম ১০০ টাকা করে কমে গেছে। ধানের বাজার ৭০ টাকা কমে গেছে।

এখানে কমবে না কেন? আমাদের ব্যবসায়ীদের মধ্যে লাভ করার প্রবণতা অনেক বেশি। এ করোনা মহামারীর মধ্যেও মানবতার অবস্থা ছেড়ে দিয়ে কীভাবে বেশি লাভ করব, কী কায়দা করলে বেশি লাভ করা যায়, এটা নিয়েও আমরা বেশি ব্যস্ত থাকি। এটা শুধু চালে নয়, সুযোগ পেলেই যেন বেশি লাভ করতে চায়, আল্লাহ তাদের ওপর মানবতার রহমত বর্ষণ করুক।

কী পরিমাণ চাল আমদানি করবেন- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা পলিসিগতভাবেই বলব না। ব্যবসায়ীরা বেশি চালাক, যদি বলি অল্প আনব, তাহলে তারা আবার স্টক করবে। চালের বাজার কন্ট্রোল না হওয়া পর্যন্ত আমরা চাল আনতেই থাকব।’

আড়তদাররা কারসাজি করে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় মিলের রেটের সঙ্গে ঢাকার পাইকারি রেটের কোনো মিল আমি দেখি না। তারা তো তাদের চালান দেখায় না, বলে চালান এখনো আসেনি। ব্যাংকের সুদের হার কমিয়ে দেওয়ার ফলে আমি মনে করি অনেকেই অনেক অর্থ ঋণ নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায় মজুদের সুযোগটা পাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। কেউ যদি মজুদ রাখে, স্পেশাল পাওয়ারে মামলার জন্য নির্দেশ দেওয়া আছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরও মামলা করতে পারবে।

নিজের কোনো চালের ব্যবসা নেই দাবি করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই লেখেন খাদ্যমন্ত্রীর চালের ব্যবসা আছে, যার জন্য চালের দাম কমে না। আমার কোনো চালের ব্যবসা নেই, মিলও নেই। এটা কিন্তু আপনাদের জানা দরকার। এটা কিন্তু বারবার আমাদের প্রশ্ন করেন, আমরা বিব্রত হই।’

মিলারদের কারসাজির কথা শোনা যায়- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ২০ হাজার মিল মিলে সিন্ডিকেট করা সম্ভব কি? তবে হ্যাঁ, এদের মধ্যে কেউ কেউ আছে, তাদের অধিক অর্থ আছে, তারা মিলে মজুদের চেষ্টা করে, মিলে মজুদ না করে গোপন অন্য কোনো জায়গায় মজুদ করে কি না সেটি আমরা মনিটরিং করার চেষ্টা করছি, গোয়েন্দা সংস্থাকে চিঠি দিয়েছি। অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে বাজার থেকে চাল তুলে নিয়ে প্যাকেটজাত করছে। এতে সরু চালের ওপর প্রভাব পড়ছে। আর মোটা চালের ওপর যে প্রভাব পড়ছে তা হলো, আমরা নন-হিউম্যান কনজামশনটা হিসাব করি না। মৎস্য, পোলট্র্রি, ডেইরি ফার্মে চাল ব্যবহার করা হয়, আমরা এগুলো হিসাবেই আনি না। সবাই মিলে একটা পরিসংখ্যান করা উচিত- মোট কত চাল গ্রহণ করা হয়, কত লোক আছে, প্রতিদিন কত লাগবে? সেই অনুপাতে আমাদের উৎপাদন করতে হবে। এই হিসাব যতক্ষণ পর্যন্ত না থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত হাতড়ে বেড়াতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর