রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাতিজাদের মামলায় ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যার বর্ণনা দিলেন পিতা

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চান্দিনায় প্রতিপক্ষ ভাতিজাদের মামলায় ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন ঘাতক পিতা সোলেমান ব্যাপারী (৪৫)। কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাকসুদুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় নিজের মেয়েকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। মামলার বাদী চান্দিনা থানার উপপরিদর্শক সুজন দত্ত জানান, বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘণ্টা খুনি সোলেমান ব্যাপারীর বক্তব্য শুনেছে আদালত। এ সময় নিজের মেয়েকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন তিনি। চান্দিনার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের সোলেমান ব্যাপারী তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, ৭ শতাংশ জমি নিয়ে তার আপন ভাতিজা শাহজালাল ও শাহকামালের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। ওই সম্পত্তির বিরোধে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।  ঘটনার পর তার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি শেষে থানায় মামলা করেন সোলেমান। সেই মামলায় পুলিশ ৩২৬ ধারা যুক্ত না করায় মাথা গরম    হয়ে যায় সোলেমানের। প্রথমে ভাবেন নিজের মাথা ফাটিয়ে ৩২৬ ধারা যুক্ত করে মামলা করবেন। কিন্তু তা থেকে সরে নিজের মেয়েকেই খুন করার পরিকল্পনা করেন তিনি।

দুই ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে ছোট্ট সংসার সোলেমান ব্যাপারীর। দুই ছেলে ইউসুফ ও ইউনুছ ঢাকার একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করার সুবাদে দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস তার। ২৫ সেপ্টেম্বর মারামারির ঘটনায় স্ত্রী হাসপাতালে থাকায় বড় মেয়ে এলমাও মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে ছিলেন।  পিতাকে রান্না করে খাওয়ানোর জন্য বাড়িতে ছিল ছোট মেয়ে সালমা (১৪)। ১ অক্টোবর হাসপাতাল থেকে স্ত্রী ও বড় মেয়েকে তার শ্বশুরবাড়ি (সোলেমানের শ্বশুরবাড়ি) পৌঁছে দিয়ে সন্ধ্যায় ফেরেন বাড়িতে। সন্ধ্যার পর মেয়ে সালমা আক্তার নিজের হাতের রান্না পিতার খাবার প্লেটে তুলে দেয়। দুজনে খাবার শেষে মেয়েকে ঘুমাতে বলে ঘর থেকে বের হয়ে যান সোলেমান। গভীর রাতে বাড়িতে এসে মেয়েকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর মরদেহ ঘর থেকে বের করে ভাতিজাদের ঘরের পেছনে নিয়ে মরদেহে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেন। পরদিন ভাতিজাসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন সোলেমান ব্যাপারী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর