শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

তৃণমূলে দ্বিধাদ্বন্দ্বে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে খুলনা আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

তৃণমূলে দ্বিধাদ্বন্দ্বে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে খুলনা আওয়ামী লীগ

খুলনায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভোটকে ঘিরে দ্বিধাদ্বন্দ্বে দূরত্ব বাড়ছে আওয়ামী লীগে। নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণার সাংগঠনিক নির্দেশনাও মানছেন না তৃণমূলের নেতারা। উপরন্তু জেলার শীর্ষ নেতাদের ‘সাংগঠনিক ক্ষমতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের বহিষ্কার করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ফলে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবার সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, দলের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় খুলনায় গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম দফা নির্বাচনে ৩৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টি হাতছাড়া হয়েছে আওয়ামী লীগের। দ্বিতীয় দফা ভোটে খুলনার ২৫টি ইউনিয়নের ১৫টিতে হেরেছেন নৌকার প্রার্থীরা। এবার তৃতীয় দফা নির্বাচনেও একক প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে দলটি। খুলনার তেরখাদার ৬টি ইউনিয়নে নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন নিজ দলেরই ১৫ জন নেতা-কর্মী।  জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে যারা প্রার্থী হয়েছেন বা যারা মদদ দিচ্ছেন তাদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে পথসভা, প্রচার-প্রচারণার নির্দেশনা থাকলেও অনেক ইউনিয়নে তা হয়নি। উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতারা চান না নির্বাচনী কাজে জেলার নেতারা উপস্থিত থাকুক। তাদের নেতৃত্ব খর্ব হচ্ছে-এ উসকানি দিচ্ছে নেপথ্যের মদদদাতারা।’  এদিকে দ্বিতীয় দফার ইউপি ভোটের পর ডুমুরিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর করে বিদ্রোহীদের কর্মী-সমর্থকরা। ওইসব ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানালে জেলার সাধারণ সম্পাদকের সমালোচনা ও তার ‘এখতিয়ার’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য করেছেন অনেকে। এতে দলের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। তবে জেলা আওয়ামী লীগে দফতর সম্পাদক এমএ রিয়াজ কচি ফেসবুকে এ ধরনের বিরূপ মন্তব্য শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফেসবুকের এসব মতামত ও বক্তব্য এলাকায় সহিংস পরিস্থিতিকে উসকানি দিচ্ছে।

 তিনি জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে দলের গঠনতন্ত্র ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।

জানা যায়, ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর হয়ে কাজ করায় ১১২ জন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারপরও দলের শৃঙ্খলা ফেরানো যায়নি। একইভাবে খুলনার রূপসা ও তেরখাদায় দ্বিধাদ্বন্দ্বে দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে।

তেরখাদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আলমগীর হোসেন গত ২০ নভেম্বর লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শহিদুল ইসলাম ফেসবুকে উপজেলা সভাপতি ও নৌকার বিরুদ্ধে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। যা এরই মধ্যে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছে।’

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর