শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

খুলনায় লবণপানিতে চিংড়ি চাষ নিয়ে মুখোমুখি দুই পক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার পাইকগাছায় লবণপানিতে চিংড়ি উৎপাদন বন্ধে আন্দোলনে নেমেছেন পরিবেশবাদীরা। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অবদানের কথা জানিয়ে চিংড়ি চাষ অব্যাহত রাখার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে চিংড়ি সমিতি। দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল খুলনার পাইকগাছায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, চিংড়ি চাষি ও ঘের মালিকদের যৌথ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাশ, কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়রা বলছেন, চিংড়ি চাষের জন্য শত শত ঘের মালিক ওয়াপদার বেড়িবাঁধ কেটে তাদের ঘেরে লবণপানি ঢুকাচ্ছেন। এতে ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসে জরাজীর্ণ ওই বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। একই সঙ্গে লবণপানিতে জমির উর্বরতা শক্তিও নষ্ট হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, পাইকগাছার সোলাদানা, গদাইপুর, দেলুটি ও গড়ইখালী ইউনিয়নে আশির দশক থেকে লবণপানিতে চিংড়ি চাষ হয়ে আসছে। এ এলাকায় জমি দীর্ঘদিন লবণপানিতে ডুবে থাকায় নষ্ট হচ্ছে জমির উর্বরতা শক্তি।

তবে চিংড়ি চাষিরা বলছেন, উপজেলার দেলুটি- জিরবুনিয়ায় প্রায় ১১ হাজার ১০০ বিঘা জমিতে তিন দশক ধরে চিংড়ি চাষ হয়ে আসছে। সেখানে বছরের শ্রাবণ মাস পর্যন্ত লবণপানিতে চিংড়ি চাষ ও নদীর পানি মিষ্টি হলে একই জমিতে ধান চাষ হয়। তাদের মতে, অযৌক্তিক কোনো বিষয়কে সামনে রেখে লবণপানিতে চিংড়ি চাষ বন্ধ হলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ব্যাহত এবং অনেকে বেকার হয়ে যাবে। তবে পাইকগাছা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাশ জানান, পরিকল্পিত উপায়ে আধুনিক পদ্ধতির চিংড়ি চাষ শুরু হলে জমিতে লবণপানি উঠানোর প্রয়োজন হবে না।

একইভাবে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, লবণপানি উঠানো বন্ধ করে মিষ্টি পানিতে চিংড়ি চাষ করতে হবে। মিষ্টি পানিতে ধান ও মাছ চাষ করে আমরা সবুজ সমারোহে ফিরতে চাই। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় ২০ একরের কম সব খাল উন্মুক্ত করে দিতে হবে। তিনি উপজেলার ২০ একরের নিচে জলমহাল ব্যক্তিগতভাবে দরপত্র মূল্য পরিশোধ করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর