স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অভাবে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি এবং মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের অসংক্রামক ও প্রতিরোধযোগ্য অসুস্থতা এবং মৃত্যুর ৩০ শতাংশের জন্যই দায়ী অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব। গতকাল অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ ঝুঁকি এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন জনস্বাস্থ্য ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা। এ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২২-এর প্রতিপাদ্য ‘লিভ নো ওয়ান বিহাইন্ড’। বিজ্ঞপ্তি।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, যা উদ্বেগজনক। বক্তারা বলেন, উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলায় কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস কমাতে পারে উচ্চ রক্তচাপজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম জানান, ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটেড থানা হেলথ কমপ্লেক্সের পরিচালক ডা. তাহমিনা সুলতানা বলেন, ‘কিছু কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে যা পর্যায়ক্রমে সারা দেশে দেওয়া হবে’। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, মাত্রাতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এবং লবণ পরিহারের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ ঝুঁকি কমানো সম্ভব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান জানান, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ড্যাশ ডায়েট বা ডায়েটারি অ্যাপ্রোচেস টু স্টপ হাইপারটেনশন এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের গাইডলাইনের প্রচারণা বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর-জিএইচএআই-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুস জানান, উচ্চ রক্তচাপসেবা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে জিএইচএআই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশ অফিসের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. ফারজানা আক্তার ডরিন বলেন, উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কাজ করছে। ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন অ্যাসোসিয়েশনের (বাফনা) সাধারণ সম্পাদক বিপুল বিশ্বাস আপন, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞার কো-অর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। বিজ্ঞপ্তি।