বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ডিএনডিতে দুঃসহ জলজট মানুষের দুর্ভোগ

নারায়ণগঞ্জ ও রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

ডিএনডিতে দুঃসহ জলজট মানুষের দুর্ভোগ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে টানা ৪৮ ঘণ্টার বৃষ্টিপাতে ডিএনডির (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) বাঁধের ভিতরে উঁচু এলাকা হাঁটু ও নিচু এলাকা কোমরসমান পানিতে তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে রাস্তা-দোকানপাট। বাড়িঘরে পানি। ড্রেন আর রাস্তা কোনটা কোথায় বোঝা দায়। শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য আর ড্রেনের পানি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে একাকার। ময়লা, নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে চলেছে সাধারণ মানুষ। শুধু ডিএনডি নয়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে দুঃসহ জলাবদ্ধতা। নারায়ণগঞ্জ শহরের অলিগলি, রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে একাকার। সংসদ সদস্য শামীম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৪) জলাবদ্ধতা সমস্যার বিশদ খোঁজখবর নিয়েছেন। সমস্যার প্রতিকারে তিনি ডিএনডি প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে দেখা যায় ফতুল্লার মুসলিমনগর, ধর্মগঞ্জ, হরিহরপাড়া, কাশিপুর, পৌষাপুকুর পাড়, হাজীপাড়া, দক্ষিণ সস্তাপুর, কোতালেরবাগ, শেহাচর, ইসদাইর, ভূঁইগড়, দেলপাড়া, আদর্শনগর, নয়ামাটি, পিলকুনি, বুড়ির দোকান সস্তাপুর, হাজীগঞ্জ, কুতুবপুর, সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিকের ১, ২, ৩, ৭, ৮, ৯, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা জলাবদ্ধ। ফতুল্লার পৌষাপুকুর ও লালপুরে সড়কের পানি কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও কোমরসমান। ফতুল্লার বাসিন্দা রাকিব বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে বছরের পর বছর জলজটে পড়ে নাকাল হয় এলাকার মানুষ। সমস্যাটির স্থায়ী সমাধানে ডিএনডি প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও সাড়ে তিন বছরেও সুফল মিলছে না।’ ফতুল্লা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আউয়াল হোসেন বলেন, ‘একটা সময় ডিএনডি পুরো এলাকা খালি ছিল। সেই খালি জায়গা দিয়ে বৃষ্টির পানি অনায়াসে নেমে যেতে পারত। এখন যেভাবে বাড়িঘর করা হয়েছে তা অপরিকল্পিত। বিভিন্ন স্থানে খালগুলো দখল করায় ড্রেনে পরিণত হয়েছে।

তাই পানি নামতে একটু সময় লাগবে।’ এ বিষয়ে মুঠোফোনে শামীম ওসমান এমপি বলেন, ‘কীভাবে দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা সে ব্যাপারে ডিএনডি প্রকল্প পরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্পটে টিম কাজ করছে।’ একই কথা জানিয়ে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর আহম্মেদ স্বপন জানান, এমপি শামীম ওসমান জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনে ফোন দিয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান-সদস্যদের তৎপর থাকতে বলেছেন। কখন কোথায় কী দরকার তা জানতে যোগাযোগ রাখতে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ পাম্প হাউসের নির্বাহী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন জানান, পাম্প হাউসে চারটি পাম্প চলছে। বিদ্যুৎ ঘাটতির জন্য কয়েকটি পাম্প চালাতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে ডিএনডিতে পানির লেয়ার কম। খুব শিগগিরই পানি নেমে যাবে। এ বিষয়ে ডিএনডি প্রজেক্ট অফিসার মেজর গাজী নাজমুল হাছান বলেন, ‘ডিএনডির যেখানে খালগুলো সরু হয়ে আছে, পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে সেই স্থানগুলো চিহ্নিত করতে মাঠে আমাদের টিম কাজ করছে। একই সঙ্গে প্রায় সাতটি পাম্প চলছে। বৃহৎ পয়েন্টে পানি নিষ্কাশন দ্রুত করার কাজ চলছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর