চলতি বছর দেশের বিভিন্ন শ্রম খাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৪৩২ জন শ্রমিক। গত বছরের তুলনায় এ বছর শ্রমিকদের প্রাণহানি বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে পরিবহন খাতে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরে ‘বাংলাদেশ অকুপেশনাল সেইফটি, হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (ওশি) ফাউন্ডেশন’। শ্রমিকদের অকালমৃত্যু রোধে কর্মক্ষেত্রকে আরও নিরাপদ করার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণসহ সাতটি সুপারিশ তুলে ধরেছে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে নিহত হয়েছিলেন ৯৬৭ শ্রমিক, আহত হন ২২৮ জন। কিন্তু ২০২৩ সালে মারা যান ১ হাজার ৪৩২ জন, আহত হন ৫০২ জন। ১৫টি সংবাদপত্র ও মাঠপর্যায় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরির কথা জানিয়েছে ওশি। সংস্থার ভাইস চেয়ারপারসন এস এম মোর্শেদ বলেন, এ বছর কর্মক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে ৩২৯ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে মারা গেছেন ১ হাজার ১০৩ জন। খাত অনুযায়ী, এ বছর পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ ৬৩৭ শ্রমিক নিহত হয়েছেন, গত বছর এ খাতে মারা যান ১০৫ জন। এ ছাড়া চলতি বছর ২২০ জন দিনমজুর, নির্মাণ খাতে ১৪৯ জন, ১৪৬ জন কৃষিশ্রমিক (এর মধ্যে বজ্রপাতে ৭১ জন), পোশাকশিল্পে ৬৪ জন, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ৯৪ জন, মৎস্য খাতে ৫৩ জন, সেবা খাতে ২৬ জন, সিরামিক শিল্পে ১৭ জন, চামড়াশিল্পে চারজন, ইটভাটায় ১১ জন, জাহাজভাঙা শিল্পে সাতজন, চা শ্রমিক একজন এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তিনজনের প্রাণ গেছে। সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, অগ্নিকান্ড, ভবন বা স্থাপনা থকে পড়ে যাওয়া, বজ্রপাত, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, সহিংসতা, গৃহশ্রমিকদের শারীরিক নির্যাতন, দেয়াল, ভবন, ছাদ ও ভূমিধসসহ বিভিন্ন কারণে এ শ্রমজীবীদের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, শ্রমিকদের অকালমৃত্যু রোধে কর্মক্ষেত্রকে আরও নিরাপদ করার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণসহ সাতটি সুপারিশ তুলে ধরেছে ওশি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে রয়েছে- প্রথমত, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধানের যথাযথ প্রয়োগ। দ্বিতীয়ত, পোশাক খাতের মতো অন্যান্য সেক্টরেও শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে সেইফটি কমিটি গঠন। তৃতীয়ত, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে এককালীন ১০ লাখ টাকা এবং আহত শ্রমিককে ৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তার বিষয়টি শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করা। চতুর্থত, আহত শ্রমিকের পুনর্বাসনের বিষয়টি শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করা, শিল্প খাতের সব সেক্টরে ‘এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম’ (ইআইএস) চালু করা, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাসংক্রান্ত তথ্যের জন্য সরকারিভাবে সঠিক ডেটাবেজ তৈরি করা। পঞ্চমত, জাহাজভাঙা এলাকায় মালিক পক্ষের প্রতিষ্ঠিত হাসপাতাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আধুনিকায়ন করা, কর্মস্থলে শ্রমিকদের উপযোগী ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহার নিশ্চিত করা। ষষ্ঠত, শিল্প মালিক এবং ব্যবস্থাপকদের জন্য জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নীতিমালা-২০১৩ সম্পর্কে ওরিয়েন্টেশন দেওয়া। সাত নম্বর সুপারিশটি হলো- শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ইউনিট চালু করা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশেষায়িত চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ওশি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সাকি রিজওয়ানা, রিসার্চ অ্যান্ড মনিটরিং অফিসার নূর আলম এবং কেস ম্যানেজমেন্ট অফিসার নুসরাত জাহান।
শিরোনাম
- তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বুড়িচংয়ে দোয়া মাহফিল
- ধর্মের দোহাই দিয়ে টিকেট বিক্রি করে কাজ হবে না: তানিয়া রব
- জবিতেও ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে রবিবার
- সোনারগাঁয়ে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মান্নানের সম্প্রীতি সমাবেশ
- ভূমিকম্প: ঢাবিতে রবিবারের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত
- নোয়াখালীতে প্রয়াত ১০৯ বিএনপি নেতাকর্মীর পরিবারকে ক্রেস্ট ও সংবর্ধনা
- তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিনির্মাণে ধানের শীষের বিকল্প নেই: দুলু
- ভূমিকম্পে নিহত শিশুর শেষ বিদায়ে পাশে থাকতে পারেননি বাবা-মা
- বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে নারীরা সুরক্ষিত থাকে: শামা ওবায়েদ
- নরসিংদীর মাধবদী কীভাবে শক্তিশালী ভূমিকম্পের কেন্দ্রে পরিণত হলো?
- 'তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে প্রতিটি পরিবারের হাতে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে'
- মুস্তাফিজকে আবারও দলে নিলো ক্যাপিটালস
- বাগেরহাটে কবি হিমেল বরকতের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
- ঢাকায় ভূমিকম্পে নিহত বগুড়ার রাফিউলের দাফন সম্পন্ন
- ‘নির্বাচনকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে’
- বিমান বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা
- বিক্রি হয়ে গেল দ্য টেলিগ্রাফ
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি প্রার্থীর উদ্যোগে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
- মিরসরাইয়ে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় ৩১ গরু আটক
- শততম টেস্টে মুশফিকের বিরল রেকর্ড
কর্মক্ষেত্রে প্রাণ গেছে ১৪৩২ শ্রমিকের
গত বছরের থেকে বেড়েছে ৪৮ ভাগ, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু পরিবহন খাতে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর