দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ ময়দানে চলছে ঈদ জামাতের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে গত ২০ দিন ধরে মিনারের সংস্কার ও মাঠের পরিচর্যার কাজ চলছে। মাঠের সৌন্দর্য বাড়াতে মিনার সংস্কার, রং করা, ধোয়ামোছা, মাঠে দাগটানা, মাটি ভরাট, মাইক টানানো, তোড়ন বানানোসহ আনুষঙ্গিক নানা কাজ চলছে। এ জন্য জেলা প্রশাসন, উপজেলা, পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর নিরলস কাজ করে চলছে। এ ছাড়া ঈদের দিন দিনাজপুরসহ দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের এখানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ে সুবিধার্থে পার্বতীপুর থেকে সেতাবগঞ্জ পর্যন্ত দুটি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু থাকবে। মুসল্লিদের জন্য মাঠে ওজুখানা ও ভ্রাম্যমাণ টয়লেটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রবেশের জন্য মাঠের চারপাশে তৈরি করা হচ্ছে ১৯টি তোরণ। শহরের প্রবেশমুখ এবং মিনারে যাওয়ার রাস্তায় তৈরি হচ্ছে তোরণ। নামাজের সময় বিদ্যুতের পাশাপাশি থাকবে জেনারেটর। লাগানো হচ্ছে শতাধিক মাইক।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, গোর-এ শহীদ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। এতে ইমামতি করবেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল হক কাসেমী। গোর-এ শহীদ ময়দানে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন বলে জানা যায়। এই বিপুল মুসল্লিদের জন্য নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। ঈদগাহ ময়দানে বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। র্যাবের জন্য ওয়াচ টাওয়ার। মাঠের চারপাশে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির পাশাপাশি থাকছে পুলিশের ড্রোন দিয়ে মাঠ পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা। গতকাল ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শনের পর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ঈদের জামাতকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাঠের আশপাশে পোশাকী বাহিনীর পাশাপাশি সক্রিয় থাকবেন সাদা পোশাকে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার সদস্যসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
সরেজমিন দেখা যায়, মাঠের একটি অংশে বেড়া দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহনের গ্যারেজ। এ ছাড়া পাশের স্টেশন ক্লাব, সার্কিট হাউস, শিশু একাডেমি ও জেলা গণগ্রন্থাগারেও যানবাহন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের জন্য তৈরি হচ্ছে বিশেষ মাচা।
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের পশ্চিম প্রান্তে ২০১৫ সালে এ ঈদগাহের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় দেড় বছর পর এটি নামাজের জন্য পুরো প্রস্তুত হয়। ঈদগাহে রয়েছে ৫২টি গম্বুজের দুধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, মাঝে দুটি মিনার ৫০ ফুট এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এসব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ ৫১৬ ফুট। প্রত্যেকটি গম্বুজে রয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি সংযোগ। মিনার দুটির উচ্চতা ৫০ ফুট, যে মেহরাবে খতিব বয়ান করবেন সেটির উচ্চতা ৫০ ফুট। ৫২ টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট।
