চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাতটি বিভাগের অন্তত চার শত ফাইল স্থবির প্রশাসকের দপ্তরে। এর মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক ফাইলই শুধু চসিকের প্রকৌশল বিভাগের উন্নয়ন কাজের। গত প্রায় দুই মাস ধরে ফাইলগুলো স্বাক্ষর না হওয়ায় আটকে আছে। বন্ধ হয়ে আছে অনেক উন্নয়ন কাজ। অনেক ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে ফেলে রাখার ঘটনাও আছে। তবে আটকে থাকা ফাইলগুলোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়- গত এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাই মাসে নানা কারণে অনেক উন্নয়ন কাজের ফাইলে স্বাক্ষর হয়নি। তাছাড়া ওই সময়ের মধ্যে সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ১৫ দিনের জন্য ছিলেন দেশের বাইরে। এরই মধ্যে গত ৫ আগস্ট হয়ে যায় দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন। এরপর থেকে চসিক মেয়রও কার্যালয়ে অনুপস্থিত। গত ২০ আগস্ট সরকার চসিকের প্রশাসক হিসেবে বিভাগীয় কমিশনারকে নিয়োগ দেয়। কিন্তু নানা কারণে প্রশাসক অতীতের কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করতে সম্মত হচ্ছেন না বলে কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়। বর্তমানে প্রশাসক চসিকে কর্মরতদের বেতন, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ সেবা জাতীয় এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলেই শুধু স্বাক্ষর করছেন।
চসিক ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন বলেন, অনেক ঠিকাদারের উন্নয়ন কাজ শেষ, অনেকের কাজ চলমান। কিন্তু এখন অধিকাংশ উন্নয়ন কাজের কোনো টাকা ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ফলে অনেক ঠিকাদার অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। আশা করছি, সামনে স্বাভাবিক নিয়মে উন্নয়ন কাজের টাকা ছাড় দেওয়া হবে।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রশাসক স্যার নতুন আসছেন। সব ফাইল দেখেশুনে-বুঝে তারপরই স্বাক্ষর করছেন। তাড়াহুড়া করে কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করা হচ্ছে না। ফলে দপ্তরে হয়তো কিছু ফাইল জমে গেছে। এর মধ্যে উন্নয়ন কাজের ফাইলও আছে। আস্তে আস্তে সব স্বাক্ষর করা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, অনেক ঠিকাদার আসছেন না। তাই উন্নয়ন কাজ চলমান রাখতে আমরা ঠিকাদারদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। আশা করি সব সমাধান হয়ে যাবে।
জানা যায়, চসিকের উদ্যোগে বর্তমানে চলমান বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে আছে- ২ হাজার ৪৯০ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকার ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প ও ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৬২ লাখ টাকার ‘বহদ্দার হাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন একটি খাল খনন’ শীর্ষক প্রকল্প। এর মধ্যে আড়াই হাজার কোটি টাকায় নগর উন্নয়ন কাজই বেশি হচ্ছে। তাছাড়া, চসিকের পরিচ্ছন্ন, রাজস্ব, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সাতটি বিভাগেরও অনেক জরুরি কাজ চলছে। এসব বিভাগের ফাইলও পড়ে আছে।