রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত আমদানি হয়েছে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। প্রয়োজনীয় আমদানি হওয়ায় এরই মধ্যে কিছু পণ্যের দামও নিম্নমুখী। তবে বিগত সময়ের মতো কারসাজি রোধ করতে এখন থেকেই বাজার মনিটরিং জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকারের নেতারা। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘দু-এক বছর ধরে রমজান ঘিরে বাজার কারসাজি করে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এবার কারসাজি রোধ করতে আগে থেকেই বাজার মনিটরিং বৃদ্ধি করতে হবে। প্রশাসনের জোরদার করতে হবে অভিযান।’ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় সব পণ্য আমদানির প্রক্রিয়া শেষ করেছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানি করা পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। আশা করছি রমজানে কোনো পণ্যের সংকট হবে না। এরই মধ্যে পণ্যের বেচাবিক্রি শুরু হয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরোদমে ক্রেতাদের আনাগোানা শুরু হবে।’ জানা যায়, দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সাধারণত রমজান শুরু হওয়ার আড়াই থেকে তিন মাস আগে থেকেই শুরু হয় তৎপরতা। রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয় এলসির মাধ্যমে। আমদানি এবং গুদামজাতের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া শেষ হয়।
এবার আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট বৃদ্ধি, এলসি সমস্যা এবং নানান সমস্যার কথা চিন্তা করেই নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ হয়েছে সব প্রক্রিয়া। কিছু কিছু পণ্য এবার প্রচলিত বাজারের বাইরে থেকে আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রমজানে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি থাকে চিনির চাহিদা। রমজান এলে শুরু হয় চিনির মূল্য বৃদ্ধির ঘোড়দৌড়। চাহিদার কথা চিন্তা করেই নির্ধারিত সময়ের আগে আমদানি এবং গুদামজাতের প্রক্রিয়া শেষ করেছেন ব্যবসায়ীরা। একই অবস্থা ছোলার ক্ষেত্রে। এবার রমজানের চাহিদার কথা চিন্তা করে রমজান শুরুর আগেই অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে কমপক্ষে ৭০ হাজার টন ছোলা।
আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, দুবাই ও সৌদি আরব থেকে পর্যাপ্ত আমদানি করা হয়েছে রমজানে আরেকটি প্রয়োজনীয় পণ্য খেজুর। ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে পিঁয়াজ, হলুদ, আদা, চিনি, গম এবং ভোজ্য তেল। এর বাইরে রমজানে সাদা মটর, মসুর ডাল, চিড়ার আমদানি হয়েছে পর্যাপ্ত। পর্যাপ্ত মজুতের সুফল পড়তে শুরু করেছে বাজারে। গত কয়েকদিন ধরে হাতে গোনা কয়েকটি পণ্য ছাড়া প্রায় পণ্যের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা। এরই মধ্যে রমজানকেন্দ্রিক কিছু ক্রেতার আনাগোনা শুরু হয়েছে দেশের ঐতিহ্যবাহী এ বাজারে। ধারণা করা হচ্ছে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই পুরোদমে শুরু হবে বেচাবিক্রি।