স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন ধোয়ার কাজে ব্যবহারের জন্য ১৯ কোটি টাকায় ওয়াশপিট স্থাপন করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। ২০২১ সালে এটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে বসানো হয়। পর্যাপ্ত সুবিধা ও প্রশিক্ষিত জনবল না থাকায় কাজে আসছে না প্ল্যান্টটি। একবার ওয়াশপিটে ঢোকানোর পর আবার ম্যানুয়ালি ট্রেন পরিষ্কার করতে হচ্ছে। রেল স্টেশনের ওয়াশপিট হলো ট্রেন পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহৃত একটি বিশেষ এলাকা। এটি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট স্থানে থাকে, যেখানে ট্রেন পরিষ্কার করা হয়। স্থাপনের পর প্রায় ২০ মাস ওয়াশপিটটি অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলেছে। বিভিন্ন জটিলতায় গত বছরের ৮ এপ্রিল রাজশাহীর প্ল্যান্টটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার ম্যানুয়ালি ট্রেনগুলো ধৌতকরণ ও পরিষ্কার করা হচ্ছে আউটসোর্সিং শ্রমিক দিয়ে। এতে মাসে অতিরিক্ত কয়েক লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। অন্যদিকে বিপুল ব্যয়ে কেনা ওয়াশিং প্ল্যান্ট অচল হওয়ায় রেলের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর রাজধানীর কমলাপুর ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে একই দিনে ওয়াশপিট দুটি উদ্বোধন করা হয়।
দুটি প্ল্যান্ট স্থাপনে ব্যয় হয়েছিল ৩৮ কোটি টাকা। স্থাপনের সময় বলা হয়েছিল-অত্যাধুনিক এই ওয়াশিং প্ল্যান্টের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেনের ছাদ, পার্শ্ব, ভিতর এবং আন্ডারগিয়ার সুচারুভাবে পরিষ্কার করা যাবে। ওয়াশপিটের মাধ্যমে প্রতিটি প্ল্যান্টে প্রতিদিন এক লাখ লিটার পানি সাশ্রয় হবে ও ব্যবহৃত ৭০ ভাগ পানি রিসাইকেলের মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা যাবে। বিদ্যুৎচালিত এ প্ল্যান্টের মাধ্যমে মাত্র ১০ মিনিটে ১৪ কোচের একটি ট্রেন ধৌত ও পরিষ্কার করার কথা ছিল। পানিতে শুধু জীবাণুনাশক ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হবে। সেভাবেই সীমিতভাবে ওয়াশিং প্ল্যান্টে ট্রেন ধৌতকরণের কাজ হয়েছে ২০ মাস। এই প্ল্যান্টে আগে স্বয়ংক্রিয় মেশিনের মাধ্যমে দিনে মোট ১১টি ট্রেন ধৌতকরণ ও পরিষ্কারের কথা বলা হলেও সেখানে দিনে আটটি ট্রেন পরিষ্কারের কাজ করা হতো। ওয়াশপিটের কর্মচারী তারেক জানান, মেশিনে ধোয়ার পরেও ভিতরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা তাদের করতে হয়। মেশিনে ধোয়ার পর পানি জমে থাকে, সেগুলো সরানোর কাজও করতে হয় শ্রমিকদের। প্রধান যান পরীক্ষক (ক্যারেজ) পদে ওয়াশপিটের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী মো. কুরবান আলী। তিনি বলেন, ওয়াশপিটটি যখন স্থাপন করা হয়েছিল তখন এখানে ৬২ ভাগ জনবলের ঘাটতি ছিল। ছিল না প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল। এখনো জনবলের ঘাটতি পূরণ হয়নি। মেশিনের ধোয়ার পর আবারও আমরা শ্রমিক দিয়েই ট্রেন ধোয়ার কাজ করছি। এতে আগের চেয়ে সময় কম লাগছে।
জানা গেছে, মেশিনের সাহায্যে ট্রেনের শুধু ছাদ ও পার্শ্ব ধৌত করা হলেও আগেও ট্রেনের ভিতর পরিষ্কার করতে হতো শ্রমিক দিয়ে। যে কাজটি এখনো শ্রমিকরাই করছেন। ফলে বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়ে কেনা মেশিনের কোনো সুফল রেলওয়ে কখনো পায়নি।