অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব উপদেষ্টার কারণে জাতীয় অনৈক্য তৈরি হয়েছে, তাদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ আহ্বান জানান। ‘রাষ্ট্রের সম্ভাব্য রাজনৈতিক সংকট ও জটিল পরিস্থিতি প্রসঙ্গে’ রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যেসব উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে, তাদের আরও আগে পদত্যাগ করা উচিত ছিল বলে মনে করেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ড. ইউনূস যেহেতু কঠোর হতে চান না, যেসব উপদেষ্টা মনে করছেন, আপনারা অনৈক্যের জন্য দায়ী, বিভেদের জন্য দায়ী, রাষ্ট্রকে একটি জায়গায় নিতে পারছেন না, প্লিজ আপনারা পদত্যাগ করুন। এর মাধ্যমে সেখানে যোগ্য লোকদের দায়িত্ব দেওয়ার পথ তৈরি করুন।
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কাসেম, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, আমিনুল ইসলাম এফসিএ, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী) সাইয়েদ নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল) গাজী নাসির এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান প্রমুখ। মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, কয়েক মাস ধরে দেশে যে পরিস্থিতি ঘুরপাক খাচ্ছিল এবং সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন পক্ষের যে দূরত্ব দৃশ্যমান হচ্ছিল তাতে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমরা বলেছিলাম এটা বন্ধ না হলে ক্রমশ জটিলতা ও সংকট দেখা দেবে। প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ নেই বলেও আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। গত কয়েকদিনে বিএনপি ও এনসিপির পাল্টাপাল্টি বক্তব?্য, ছয়জন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি, যমুনা অবরোধ করে গত কয়েক মাসের নানা দাবি-দাওয়া-আন্দোলন এবং সর্বশেষ সোশ্যাল মিডিয়া ও কিছু সংবাদপত্রে সেনাপ্রধানের অফিসার্স অ্যাড্রেসে প্রদত্ত বক্তব্যের প্রচার ব?্যাপক ধূম্রজাল তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, বড় দুটি দল নিজেদের ক্ষমতাকেন্দ্রিক বিভেদে লিপ্ত হয়ে প্রশাসনকে অকার্যকর ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটিয়েছেন। এসব বিষয়ে সরকারের অবস্থান ছিল অস্পষ্ট ও দুর্বল। নির্বাচনের রোডম?্যাপ নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসায় এবং সরকার অনির্দিষ্ট মেয়াদে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকতে চান এরকম একটি সন্দেহ সংশয় কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। এসব বিষয়ে আমরা বারবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও বিবদমান পক্ষগুলো বসে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার কোনো পদক্ষেপ নেননি। সেনাবাহিনী প্রধানের সর্বশেষ বক্তব্য প্রসঙ্গে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, উনার বক্তব্যটা আমরা সোশ?্যাল মিডিয়া ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে জেনেছি। কোনো সরকারি তথ?্যসূত্র বা সংস্থার অফিসিয়াল বক্তব?্য আকারে পাইনি। বিস্তারিত বক্তব্যটা আইএসপিআর বা সরকারি তথ?্যসূত্রের আলোকে এলে ভালো হতো। সেনাপ্রধান এর আগেও ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। বিডিআর বিদ্রোহের বিচার, ইনক্লুসিভ ইলেকশন ও সংস্কার বিষয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেছেন। আমরা যতটুকু জানি সরকারের পক্ষ থেকে এ ব?্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।