সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের পুশইন থামছেই না। সুযোগ পেলেই তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে পাঠাচ্ছে তথাকথিত অনুপ্রবেশকারীদের। গত তিন সপ্তাহে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অন্তত ৫০০ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের আগ্রাসী তৎপরতা ঠেকাতে সীমান্তজুড়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বিজিবি। নেওয়া হয়েছে চার স্তরের ব্যবস্থা। বিজিবির সঙ্গে সীমান্ত পাহারায় নেমেছেন সাধারণ মানুষও। এরপরও নানা কৌশলে পুশইন অব্যাহত রেখেছে বিএসএফ। সিলেট বিভাগের তিন দিক ঘিরে আছে ভারতের আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা রাজ্য। কোথাও স্থল আবার কোথাও নদী ভাগ করেছে সীমান্ত। স্থল সীমান্তের বেশির ভাগ অংশে ভারত কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রেখেছে। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ ব্যাপক হারে পুশইন শুরু করে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে সিলেট বিভাগের চার জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ শুরু করে পুশইন। সর্বশেষ গতকাল সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার নওয়াগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ২১ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। পরে তাদের আটক করেন বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। এ নিয়ে বিয়ানীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৫৩ জনকে পুশইন করল বিএসএফ। বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ভারতে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন। তারা সেখানে দিনমজুরের কাজ করতেন।
এর আগে গত বুধবার বিজিবি ১৯ ও ৪৮ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন সিলেট ও সুনামগঞ্জের চারটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ৮২ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি দিয়ে ৩২ জন, মিনাটিলা দিয়ে ২০ জন ও ডিবির হাওর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জনকে পুশইন করা হয়। একই দিন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক ছনবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ পুশইন করে ১৬ জনকে।
বিজিবি সূত্র জানায়, ৭ মে থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৫১১ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১৪৫, মৌলভীবাজারে ৩৩১, হবিগঞ্জে ১৯ এবং সুনামগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে বিএসএফ ঠেলে পাঠিয়েছে।
সিলেটের বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের (জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার জানান, পুশইন ঠেকাতে সীমান্তে চার স্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সীমান্তে চব্বিশ ঘণ্টা টহল জোরদার ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। পুশইন ঠেকাতে স্থানীয় লোকজনও এগিয়ে এসেছেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে বিজিবি সীমান্তে কাজ করছে। বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর কারণে বিএসএফ কৌশলে ভোররাতে পুশইনের চেষ্টা করছে।