চট্টগ্রাম বন্দর-সংশ্লিষ্ট বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোর হ্যান্ডলিং চার্জ আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্ধিত চার্জ কার্যকরের বিষয়টি এরই মধ্যে ব্যবহারকারীদের চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা)। রপ্তানি ও খালি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশেরও বেশি চার্জ বাড়ছে।
ডিপো ব্যবহারকারীরা এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, এতে দেশের রপ্তানি খাত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাড়বে ব্যবসা-ব্যয়। চার্জ বাড়ানোর আগে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা করা হয়নি বলেও তারা অভিযোগ করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হওয়া পণ্যের প্রায় ৯৩ শতাংশ এবং আমদানির ২০ শতাংশ হ্যান্ডলিং হয় বেসরকারি ডিপোর মাধ্যমে। এ ছাড়া খালি কনটেইনারও হ্যান্ডলিং করে ডিপোগুলো। বর্তমানে ২১টি বেসরকারি ডিপো রয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি রপ্তানিপণ্য হ্যান্ডলিং করে থাকে। জানা গেছে, কনটেইনারের নতুন প্যাকেজ চার্জ (স্টাফিং থেকে বন্দরে নেওয়া) নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ ফুট ৯ হাজার ৯০০ টাকা, ৪০ ফুট ১৩ হাজার ২০০ এবং ৪৫ ফুট ১৪ হাজার ৯০০ টাকা। যা আগে ছিল যথাক্রমে ৬ হাজার ১৮৭, ৮ হাজার ২৫০ ও ৯ হাজার ৯০০ টাকা। গ্রাউন্ড রেন্ট ধরা হয়েছে ২০ ফুট ১৫০ টাকা, ৪০-৪৫ ফুট ৩০০ টাকা। আগে ছিল যথাক্রমে ১১৫ ও ২৩০ টাকা। এ ছাড়া সিএফএস স্টোরেজ চার্জ, বিভিন্ন ধরনের হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট চার্জ, খালি কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জসহ আরও কয়েকটি খাতে বাড়ানো হয়েছে। চার্জ বাড়ানোর কারণ হিসেবে বিকডা মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, শ্রমিক মজুরি, ইকুইপমেন্ট আমদানি-ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বেড়েছে। এ ছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার দরের পতন, ব্যাংক-সুদের হার বৃদ্ধিসহ নানা কারণে বিকডা খালি কনটেইনার এবং রপ্তানিপণ্য কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ পুনর্নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশ ফ্রেইট ফেরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশেনের (বাফা) সাবেক সহসভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যে এখন ভালো যাচ্ছে, তা নয়। প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্প চ্যালেঞ্জের মুখে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপ হলে সে দেশের বাজার হারাতে পারে এ শিল্প। এমন পরিস্থিতিতে ডিপোগুলো হ্যান্ডলিং চার্জ বাড়ালে তৈরি পোশাকসহ দেশের রপ্তানি খাত বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবে। বাড়বে ব্যবসা-ব্যয়। তিনি জানান, এককভাবে বিকডা চার্জ বাড়াতে পারে না। ২০১৬ সালের আইসিডি নীতিমালা অনুযায়ী এর জন্য ট্যারিফ কমিটি রয়েছে।