উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ২০২৫-২৬ অর্থবছরেও আগের ধারায় সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামীকাল গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানান, নতুন মুদ্রানীতির খসড়া আজ পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করা হবে। সেখানে অনুমোদন পেলে পরদিন তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। মুদ্রানীতি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নীতি সুদহার (রেপো রেট) ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কারণ এখনো মূল্যস্ফীতি কাক্সিক্ষত পর্যায়ে নামেনি। বর্তমানে নীতি সুদহার ১০ শতাংশ, যা তিন বছর আগেও ছিল ৫ শতাংশ। এ দ্বিগুণ হারের কারণে ব্যাংক ঋণের সুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫-১৬ শতাংশে। এতে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে স্থবিরতা নেমে এসেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ, কিন্তু বাস্তবে তা অর্জিত হয়নি। ২০২৪ সালের মে থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত এক বছরে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। নিকট অতীতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধিতে এতটা ভাটা দেখা যায়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তিন বছর ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকা মূল্যস্ফীতি এখন কমতে শুরু করেছে।
এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির ফল। মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে না নামা পর্যন্ত নীতি সুদহার অপরিবর্তিত থাকবে। ফলে চলতি বছরের বাকি সময়েও সুদহার কমার সম্ভাবনা নেই।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি কার্যকর হলেও উচ্চ সুদহার বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই রাখতে সুদের ভারসাম্য রক্ষা জরুরি।