নেপালের সাম্প্রতিক জেন-জি আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটে। আন্দোলনে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক সহিংসতা। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় ‘রাষ্ট্রের’ ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আন্দোলনের পরিকল্পনা আগে থেকে জানা থাকলেও ঠিক কী কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র, এ সংক্রান্ত পাঁচটি কারণ উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।
প্রথমত, নিরাপত্তা পরিকল্পনায় কে পি শর্মা ওলি সরকারের ব্যর্থতা। জেন-জি আন্দোলনের পরিকল্পনা আগে থেকে জানা থাকলেও সরকার সঠিক নিরাপত্তা কৌশল তৈরি ও কার্যকর করেনি। সমন্বয়ের অভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কাঠমান্ডু প্রশাসন নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হয়।
দ্বিতীয়ত, সরকারের বিলম্বে সাড়া। ব্যাপক প্রাণহানির পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক ডাকেন। অথচ সেদিন সকালেই তিনি মাঠের পরিস্থিতি দেখার পরিবর্তে শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে পুলিশ বিল নিয়ে আলোচনা করছিলেন।
তৃতীয়ত, কাঠমান্ডু ভ্যালি পুলিশে নেতৃত্বশূন্যতা। আন্দোলনের আগে অবসর নেন কাঠমান্ডু ভ্যালি পুলিশ অফিসের এআইজি টেক বাহাদুর তামাং। ফলে ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছিল কাঠমান্ডু পুলিশ। এমন স্পর্শকাতর সময়ে পূর্ণাঙ্গ এআইজি না থাকায় নিরাপত্তা শৃঙ্খলে দুর্বলতা তৈরি হয়।
চতুর্থত, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির অবস্থান। জনগণের ক্ষোভ মোকাবিলা করা বা নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো দূরে থাক, তিনি অস্থিরতার জন্য ‘বিরোধী শক্তিকে’ দায়ী করেন। পদত্যাগের আহ্বান এলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন, যদিও পরবর্তী সময়ে সর্বমুখী চাপে পদ ছাড়তে বাধ্য হন।
পঞ্চমত, দুর্নীতির প্রতি তরুণ প্রজন্মের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষোভ। কেবল নিরাপত্তা দুর্বলতা নয়, দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার, বড় কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি না করা ও বিভিন্ন অনিয়মের ফলে নেপালে তীব্র জনঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের মুখে সেই ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়ে সহিংস আন্দোলনে রূপ নেয়। সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট
বিডি প্রতিদিন/একেএ