কোনোভাবেই মশা মারতে পারছে না রাজশাহী সিটি করপোরেশন। বিশেষ করে মশা উৎপাদনের ক্ষেত্রগুলো পরিষ্কার না করায় এর খেসারত দিতে হচ্চে সাধারণ মানুষকে। নগরবাসীর অভিযোগ, উন্নয়ন থমকে যাওয়ার পাশাপাশি নগরীর ড্রেন, নর্দমাগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ড্রেন-নর্দমাসহ ঝোপঝাড়ে বাসা বেঁধেছে মশা। দিনরাত মশার কামড়ে অতিষ্ঠ নগরবাসী। দিনের বেলায়ও ঘুমাতে হচ্ছে মশারি টানিয়ে বা কয়েল জ্বালিয়ে। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর বর্ণালীর মোড় থেকে তেরোখাদিয়া হয়ে যাওয়া বড় ড্রেনটি অন্তত তিন মাস পরিষ্কার করা হয়নি। ওই ড্রেনে মশার বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ড্রেনের পাশেই লন্ড্রি দোকানের মালিক ভুট্টু রহমান বলেন, ‘দোকানে দিনের বেলায়ও দাঁড়িয়ে থাকা যায় না মশার অত্যাচারে। সারাক্ষণ কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। আমার এমনিতেই শ্বাসকষ্ট। এর মধ্যে কয়েল দিলে আরও কষ্ট হয়। কিন্তু মশার হাত থেকে বাঁচতে কয়েল জ্বালাতেই হয়।’ মুদি দোকানদার মাজদার হোসেন জুয়েল বলেন, ‘দোকানের ভিতর বসে থাকা দায় মশার অত্যাচারে। আর বিকালের পর তো বাইরেও এক মিনিট শান্তিতে ক্রেতারা দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না মশার দাপটে। এত মশার মাঝে যেন টেকাই দায়।’ উপশহর এলাকার বাসিন্দা মোন্তাজুর রহমান বলেন, ‘সেই কবে মশার ওষুধ ছিটাইছে মনে নাই। এক বছর তো হবেই। এ কারণে গত শীতের থেকে এবার মশার আক্রমণ বেশি। ড্রেনগুলো বা বাসার আশপাশের অলিগলিতে ময়লা-আবর্জনার কারণে মশার বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও স্থবির হয়ে আছে। ফলে মশার অত্যচার বেড়েছে।’
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও মুখপাত্র শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, ‘মশা বৃদ্ধির কারণে রাজশাহীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছর ডেঙ্গু রোগে তিনজন মারা গেছে এ হাসপাতালে। প্রতিদিনই রোগী ভর্তি হচ্ছে। করোনার চেয়েও ভয়ংকর ডেঙ্গু রোগ। কিন্তু এ রোগে সচেতনতা অনেক কম। ফলে এ সময়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে অনেক।’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন ডলার বলেন, ‘মশা অনেকটাই বেড়েছে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই। ওয়ার্ড পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি না থাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও কমেছে। তা ছাড়া বাড়ির পাশের ঝোপঝাড় অনেকে পরিষ্কার রাখছেন না।
ছাদবাগানের টবের পানি থেকেও বংশবৃদ্ধি ঘটছে মশার। এসব ব্যাপারে নগরবাসীকেও একটু সচেতন থাকতে হবে। তা হলে মশার সংখ্যা কমবে।’