মাদারীপুরের শিবচরে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেয়ার পরে শুক্রবার সকাল থেকে শিবচরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মাদারীপুরের শিবচরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ওষুধ, কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান ছাড়া অন্যসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার ফলে বিভিন্ন হাট-বাজার ও আবাসিক এলাকায় লোক সমাগম অন্য দিনের তুলনায় খুবই কম দেখা গেছে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না। এদিকে করোনার প্রভাব পড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে। চালের দাম বেড়েছে প্রতি বস্তায় প্রকার ভেদে ২০০-৩০০ টাকা। জানা গেছে, কার্যত লকডাউন শিবচর উপজেলা, কাগজে-কলমে প্রশাসন ঘোষণা না দিলেও রাস্তাঘাট, দোকানপাটে নেই জনসমাগম। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাচ্ছে না মানুষ। স্বাস্থ্য বিভাগ দেশের সর্বোচ্চ ঝুঁর্কিপূণ ঘোষণা করেছে শিবচর উপজেলাকে। আর এরই প্রভাবে আতঙ্কিত মাদারীপুরের অন্য উপজেলার মানুষও। এই সুযোগে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। যদিও প্রশাসন বলছে, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ রাখা হবে। করোনা সংক্রমণ রোধে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান ছাড়া বাকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার পরে থেকে জেলা জুড়েই এর প্রভাব পড়েছে।
মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুর জেলায় সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছে অন্তত ৩ হাজারের বেশি প্রবাসী, যার অধিকাংশই শিবচর উপজেলার বাসিন্দা। যে কারণে এ পর্যন্ত যারা করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তার বেশি ভাগই শিবচরের। তাই হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার নির্দেশ সিভিল সার্জনের।
মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন বরেন, করোনার মতো ইস্যুকে নিয়ে যারা প্রতারণা করছেন তাদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়ানোর জন্য শিবচর পৌরসভার ২টি ওয়ার্ড ও ২ ইউনিয়নের ২ গ্রামের জনগণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। এই উপজেলার গণপরিবহন বিশেষ করে বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটাকে আমরা কনটেইনমেন্ট বলছি। গণজমায়েতসহ সব ধরনের মিছিল মিটিং বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি শিবচর উপজেলাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করে বলেন, এই এলাকায় প্রবাসী লোকের সংখ্যা বেশি। মাদারীপুরের চার উপজেলা, চার পৌরসভা ও ৬০টি ইউনিয়নে করোনা প্রতিরোধে কমিটি করেছে প্রশাসন। এছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে একটি সেলও গঠন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার আহবান জানান তিনি। করোনার সুযোগে যারা দ্রব্যমূল্য বাড়াবে তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হবে বলেও জানান।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক