মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় তিনদিন আগেও ছিল প্রাণচাঞ্চল্য। এখন এই শহরে শুনসান নিরবতা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে এই জনপদে। প্রবাসী অধ্যুষিত এই এলাকা করোনা ঝুঁকিতে শীর্ষে রয়েছে সারা দেশের মধ্যে।
এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন জানায়, করোনা ঝুঁকির কারণে নাগরিকদের চলাচলে বিধি নিষেধ জারি করা হয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ওষুধ, কাঁচামাল ও মুদি দোকান ছাড়া সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গণজমায়েত ও লোকাল পরিবহন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের শিবচর ‘লকডাউন'র পর অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় উপজেলার ৪টি এলাকায় প্রায় ১২ হাজার মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এসব এলাকার প্রবেশপথ ও বাহির হওয়ার পথে গতিরোধ নিয়ন্ত্রণ করতে ১৬টি পয়েন্টে প্রায় ২৫০ জন পুলিশ মোতায়ন করা রয়েছে। করোনা আতঙ্কে হাটবাজারগুলোতে মানুষের আনাগোনাও কমে গেছে। মানুষ ঘর থেকে খুব একটা বের হচ্ছেন না। পুরো শিবচর উপজেলায় খাদ্য ও ওষুধ ছাড়া অন্যান্য দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও কয়েকটি দোকান খোলা রাখায় তাদের আর্থিক জরিমানা করা হয়। ফলে রাস্তায় লোকজনের সমাগম নেই বললেই চলে।
প্রশাসনে কঠোর নির্দেশনা থাকলেও বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রবাসী আসে মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়। যাদের অধিকাংশই হোম কোয়ারেন্টাইনে অবস্থান না করে প্রকাশ্যে চলাফেরা করেছেন। ফলে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসন থেকে শিবচর উপজেলায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে। এর মধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ৪টি এলাকা প্রশাসনের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে সকল প্রবাসী এই বিধিনিষেধ মানবেন না তাদের বাধ্যতামূলক শিবচর শেখ ফজিলাতুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখার নির্দেশ রয়েছে। তবে দুটি মুদি দোকান খোলা রাখায় ২০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, শিবচরের ৪টি এলাকা করোনা সংক্রমণরোধে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। এইসব এলাকায় প্রবেশ পথে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তাদের বাইরে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব এলাকায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সেই এলাকার মানুষদের খাদ্য ও জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র স্বেচ্ছাস্বেবীদের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়াও গরীব মানুষদের খাদ্য সহয়তার জন্য রিলিফের ব্যবস্থাও করা হবে বলে তিনি জানান।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম