দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে দুর্দশায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বিভিন্ন বেসরকারি হিসাবে, রাজধানীতে কমপক্ষে ৪২ লাখ দিনমজুর এখন তীব্র সংকটে আছেন খাদ্যের পর্যাপ্ত সহায়তার অভাবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঘোষিত বরাদ্দ পাঁচ কোটির বেশি শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে ভাগ করলে মাথাপিছু মাত্র ১৫০ টাকা করে পড়ে, যা তাদের জীবনধারণের জন্য অপ্রতুল।
জানা যায়, করোনা সংক্রমণের ভয়ে বেশিরভাগ মানুষ কাজ বন্ধ রেখেছে। কাজ নেই তো দিনমজুরের খাবারও নেই। সে কারণে অনেকেই সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে গ্রামে ফিরে গেছেন। আবার কেউ কেউ ক্ষুধার জ্বালায় করোনার ভয় তুচ্ছ করে কাজের সন্ধানে প্রতিদিন হাটে আসেন; কিন্তু বেশিরভাগ দিনই শূন্য হাতেই ফিরতে হয়।
করোনা পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষেরা। বাইরে বের হওয়ার সুযোগ না থাকায় তাদের উপার্জনের পথ প্রায় পুরোপুরি বন্ধ। দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালক, বাসচালক, চালকের সহকারী, গৃহকর্মী- এমন সব নিম্ন আয়ের মানুষ প্রতিদিনের খাবার জোগাড় করা নিয়ে মহাসংকটে পড়েছেন। সহায়তা মিললেও সেটা যথেষ্ট নয়।
ব্র্যাকের এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার কারণে ৭২ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছেন বা কাজ কমে গেছে। মাত্র ৮ শতাংশ মানুষের কাজ থাকলেও এখনো তারা বেতন পাননি। এর মধ্যে ৬২ শতাংশ দিনমজুরের আয় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। ১৪ শতাংশ মানুষের ঘরে কোনো খাবারই নেই। ২৯ শতাংশের ঘরে আছে এক থেকে তিন দিনের খাবার।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, কর্মহীন ও আয় বন্ধ হয়ে যাওয়া দরিদ্র মানুষের জন্য নগদ টাকাসহ অন্যান্য সহায়তা দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতি মাসে সরকারের খরচ হবে পাঁচ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা