চীন থেকে আসা কিট ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় ভারতের সব রাজ্যকে র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট বন্ধ রাখতে বলেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ। এই অবস্থায় বিকল্প হিসেবে ট্রু-ন্যাট পদ্ধতিতে কোভিড স্ক্রিনিং টেস্টের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যর স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল বুধবার (২৯ এপ্রিল) রাজ্যের ১৫টি কেন্দ্রে মাইক্রোবায়োলজিস্ট এবং টেকনিক্যাল স্টাফদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা রোধে কন্টেনমেন্ট জ়োনে নজরদারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টের (আরটি-পিসিআর) মাধ্যমে সেই কাজ করা হচ্ছিল। এই টেস্টের সঙ্গে ট্রু-ন্যাটের তফাৎ কী?
এসএসকেএমের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান তথা ভিআরডিএল প্রজেক্টের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর চিকিৎসক রাজা রায় জানান, করোনাভাইরাস গ্রুপে সাত ধরনের করোনাভাইরাস রয়েছে। এই পরিবারের সবচেয়ে নতুন সদস্য হল নোভেল করোনাভাইরাস। ‘ট্রু-ন্যাট’ যন্ত্র করোনাভাইরাস গ্রুপকে চিহ্নিত করতে পারে।
তার কথায়, ভাইরাসের অস্তিত্ব চিহ্নিত করার প্রশ্নে র্যাপিডের কিটের তুলনায় ‘ট্রু-ন্যাট’-এর কার্যকরী ক্ষমতা অনেক বেশি। আরটি-পিসিআরে নমুনা পরীক্ষা করতে দক্ষতা প্রয়োজন। সে তুলনায় ‘ট্রু-ন্যাট’-এর ব্যবহার অনেক সহজ, খরচ কম, রিপোর্টও দ্রুত পাওয়া যায়। তবে লালারসের নমুনায় কোভিডের অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে হলে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমেই তা সম্ভব।
আইসিএমআর জানিয়েছে, ‘ট্রু-ন্যাট’-এ নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তা চূড়ান্ত ধরা হবে। রিপোর্ট পজিটিভ হলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরটি-পিসিআর আবশ্যক। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, আইসিএমআর অনুমোদিত এ রাজ্যে ছ’টি ভিআরডিএল ল্যাবকে ‘ট্রু-ন্যাট’ পদ্ধতিতে ১৫টি জেলায় পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেন্ট্রাল টিউবারকিউলোসিস ডিভিশন থেকে এ রাজ্যের জন্য ৩২টি ‘ট্রু-ন্যাট’ যন্ত্র পাঠানোর কথা হয়েছে।
বেলেঘাটায় অবস্থিত ইন্টারমিডিয়েট রেফারেন্স ল্যাবরেটরি (আইআরএল)-এর ইনচার্জ চিকিৎসক প্রশান্ত দাস বলেন, একটি নমুনা পরীক্ষা করতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট। একটি যন্ত্র আট ঘণ্টা কাজ করলে সারা দিনে ২০টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। তবে স্বাস্থ্য দফতরের খবর, আগামী দিনে ‘সিবি-ন্যাট’ পদ্ধতিতে করোনা-স্ক্রিনিংয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, কোভিড কি না নিশ্চিত হতে হলে নমুনায় ‘নিউক্লিওক্যাপসিড’ এবং ‘এনভেলপ’- এই দু’টি জিনের অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে হয়। ‘ট্রু-ন্যাট’ ‘এনভেলপ’ জিন চিহ্নিত করতে পারে। সেখানে ‘সিবি-ন্যাট’ দু’টি জিনই চিহ্নিত করতে সক্ষম। তবে এতে পরীক্ষার খরচ অনেক বেশি।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ