প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। বিশ্বব্যাপী ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৩৪ লাখ ২ সহস্রাধিক মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬ শতাধিক মানুষের। এই ভাইরাসের ধ্বংসযজ্ঞে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও ব্রিটেন ছাড়াও বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকাও। এই ভাইরাসের তাণ্ডবে অসহায় হয়ে পড়েছে এসব দেশ।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থাবা বসিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলেও। দেশটিতে ইতোমধ্যে ৯২ হাজার ২ শতাধিক মানুষ। মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৬ হাজার ৪১২ জনের। অথচ এই মহামারীর বিষয়টি পাত্তাই দিতে চাচ্ছেন না ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো।
এত মৃত্যুর পরও তিনি বলেছেন, তাতে কী হয়েছে?
তার এমন মন্তব্যের সমালোচনা হচ্ছে সবখানে। একটি দেশের প্রেসিডেন্টের ‘সহানুভূতিহীন’ এমন মন্তব্যে অবাক সবাই। তাই ক্ষোভ ঝাড়তে ছাড়ছেন না গভর্নর, রাজনীতিবিদ, স্বাস্থ্যকর্মী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের কেউই। তবে এসব সমালোচনা বলসোনারোর কাছে নতুন কিছু না। করোনা নিয়ে বিরোধের জেরে সম্প্রতি বরখাস্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। ওই সিদ্ধান্ত নিয়েও সমালোচনায় পড়তে হয় তাকে।
ব্রাজিলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার দিকে এগোচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে করোনায় ব্রাজিলে মৃত্যুর সংখ্যা প্রত্যাশার বাইরে চলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরকারি তথ্যে মতে, ২১ কোটি জনগণের দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯২ হাজার ছাড়িয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যাটা ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি!
গত সপ্তাহে ব্রাজিলে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়ায়, যা এই ভাইরাসের আঁতুরঘর চীন থেকে বেশি। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে বলসোনারো সাংবাদিকদের বলেন, তাতে কী হয়েছে? আপনারা আমাকে দিয়ে কী করাতে চান? আমি জাদুকরি কিছু করতে পারব না।
প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্য শুনে চটেছেন রিও ডি জেনেরিওর গভর্নর উইলসন উইটজেল। বলসোনারোর এমন বক্তব্য ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। কঠিন এই মুহূর্তে ‘নেতা হওয়ার পরিবর্তে’ প্রেসিডেন্ট মৃত্যু নিয়ে ‘ব্যঙ্গাত্মক’ মন্তব্য করছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উইটজেল। বলসোনারোকে উদ্দেশ করে টুইটারে লিখেছেন “আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করুন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ওয়ার্ল্ডওমিটার
বিডি প্রতিদিন/কালাম