রংপুরের কাউনিয়ার স্থানীয় জনগণ ঢাকা থেকে কেউ এসে মারা গেলে লাশ দাফনে এগিয়ে আসে না। বৃহস্পতিবার রাতে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের কাচু আলুটারী গ্রামে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর পর সারারাত বাড়ির উঠানে পড়েছিল লাশ। লাশ দাফনে কেউ এগিয়ে আসেনি।
এমন অমানবিক আচরণের খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। শুক্রবার সকালে তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী দলকে সাথে নিয়ে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন।
এ নিয়ে কাউনিয়ায় করোনার ৪ মাসে ঢাকাফেরত ৫ জন মারা গেলেন। মৃত এসব ব্যক্তিদের কারো লাশ দাফনে এগিয়ে আসেনি স্থানীয় লোকজন। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে লাশ দাফন করেছে।
আলুটারী গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর মাস্টারের তৃতীয় ছেলে শাহাদাত আলম ঢাকায় চাকরি করতেন। গত ১৭ জুলাই গ্রামের বাড়ি আসেন। আসার পর তার জ্বর, শ্বাসকষ্ট উপসর্গ দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার সন্ধায় অসুস্থ হলে তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে করোনার উপসর্গে নিয়ে মারা যাওয়ায় সংক্রমণের ভয়ে পরিবারের লোকজন এবং ওই গ্রামের কেউ তার লাশ গোসল ও দাফনে এগিয়ে আসেনি। প্রায় ১০ ঘণ্টা মরদেহ বাড়ির উঠানে পড়ে ছিল। মৃত্যুর পর তার মরদেহের পাশে মাকেও আসতে দেয়নি পরিবার ও স্থানীয় লোকজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উলফৎ আরা বেগম জানান, আমি রাতে খবর পেয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে ভোরে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি।
তিনি আরো জানান, এ নিয়ে ঢাকাফেরত ৫ জনের মৃত্যু হল। ঢাকা থেকে কেউ এসে মারা গেলে করোনার ভয়ে কেউই লাশের কাছে আসে না। এটা খুবই দুঃখ জনক।
তিনি বলেন, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক মাহমুদুল হাসান পিন্টু, জামিল হোসাইনদের সহয়োগিতায় শুক্রবার ভোরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক ওই ব্যক্তির লাশ বাড়ির পাশে কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন