মোংলাসহ বাগেরহাট জেলায় বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। শুক্রবার করোনা হটস্পট মোংলায় সংক্রামণের হার ৬১. ২২ ভাগ থেকে কমে ৫০. ৯৮ ভাগে দাঁড়িয়েছে। তবে, একই দিন মোংলার পার্শ্ববর্তী উপজেলা রামপালে করোনা শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২.৭২ শতাংশে। জেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ জন। এর মধ্যে মোংলা উপজেলায় ২৬ জন, রামপালে ১৬, সদর উপজেলায় ৯, মোড়েলগঞ্জে ২ ও শরণখোলা উপজেলায় ২ জন রয়েছেন।
শুক্রবার বাগেরহাট জেলায় গড় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস জানান, আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর মোংলা হাসপাতালে নেই কোনো আইসিইউ বেড, হাইফো ন্যাজেল ক্যানেলা ও সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা। ইতোধ্যেই করোনা চিকিৎসায় দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সংকট।
এ অবস্থায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগকে। যেসব করোনা রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে।
মোংলায় হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগী ভীর্ত থাকায় ভয়ে সাধারণ রোগীরা হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন। ওয়ার্ডগুলো ফাঁকা পড়ে রয়েছে। মোংলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে মোংলায় দুই দফা দেওয়া করোনা বিধিনিষেধে জারির পরও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ১৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত চলমান কঠোর বিধিনিষেধকে আরও অধিক কঠোরতর করে জারি করেছে বাগেরহাট জেলা প্রশাসন। নতুন করে জারি করা এ বিধিনিষেধে নদী পারাপার, যান চলাচল, দোকানপাট, পশুর হাট বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তা মানতে দেখা যায়নি। নদী পারাপার ও যান চলাচল করছে, রয়েছে লোকসমাগমও। খোলা রয়েছে দোকানপাটও। স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের বালাই নেই। পৌর শহরের প্রবেশমুখগুলোতে পুলিশ আনসার থাকলেও সেখান থেকে হরহামেশা বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন ও যানবাহন চলাচল করছে। স্থায়ী বন্দর এলাকায়ও বাসসহ বিভিন্ন যান চলাচল ও লোকসমাগমও বেশ দেখা গেছে।
নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ভারতগামী নৌযানের স্টাফরা শহরে নেমে ঘুরাফেরা করছেন। গাদাগাদি করে নদী পারাপার ও নৌযানের স্টাফদের অবাদ চলাচলের বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই অবস্থায় সংক্রমণের হার আরও বাড়বে বলে ধারণা করছে স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, জেলায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪৬ জনের। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। এখন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৩ জন। বাকিরা হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ