বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দখল-আবর্জনায় ছোট হচ্ছে কুমার নদ

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

দখল-আবর্জনায় ছোট হচ্ছে কুমার নদ

দিনে দিনে ছোট হচ্ছে এক সময়ের খরস্রোতা কুমার নদ। অব্যাহত দখলের কারণে ফরিদপুর জেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া এ নদ ঐতিহ্য হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। যদিও খননের মাধ্যমে কুমার নদকে রক্ষার জন্য চলছে খনন কাজ। জানা যায়, এক সময় কুমার নদে চলাচল করতো বড় বড় নৌকা-লঞ্চ। এ সব নৌ-যান দিয়ে ফরিদপুর থেকে বিভিন্ন উপজেলায় মানুষ যাতায়াত করতো। কালের বিবর্তনে নদটি এখন মৃতপ্রায়। নদের বেশির ভাগ জায়গা দখল হয়ে গেছে। প্রভাবশালী একটি মহল নদের পাড় দখল করে তৈরি করেছে স্থাপনা। বেশির ভাগ কৃষক এক সময় এ নদের পানি দিয়ে সেচ সুবিধা পেতো। কুমার নদের অম্বিকাপুর অংশে বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় নদের গতিপথ। নদটি হারাতে থাকে ঐতিহ্য। একদিকে দখল অন্যদিকে আবর্জনা ফেলে নদের পানি দূষিত করা হচ্ছে। শহরের একাধিক স্থানে কুমার নদে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। শহর ও শহরতলির অনেক স্থানে বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এ নদে। সম্প্রতি কুমার নদের পানি পরীক্ষায় ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠে। পৌরসভা সূত্র জানায়, এ নদের পানিতে জৈব্য দূষণের মাত্রা যেখানে প্রতি লিটারে শতকরা ৪০ ভাগ থাকার কথা সেখানে পাওয়া গেছে ৩৯৬ ভাগ। আর অজৈব্য দূষণের মাত্রা প্রতি লিটারে দুই হাজার ৮৮০ ভাগ। মলবাহিত জীবাণুর মাত্রা দুই হাজার ৯৫০ ভাগ। কলেরা ও ডায়রিয়া সংক্রান্ত জীবাণুর মাত্রা রয়েছে দুই হাজার ৫১০ ভাগ। এক সমীক্ষায় বলা হয়, পৌরসভার ৪৫ ভাগ বাসাবাড়ির মানববর্জ্য কখনো নিয়মমাফিক পরিষ্কার করা হয় না। এ সব বাসাবাড়ির বেশির ভাগ মানববর্জ্য বিভিন্নভাবে কুমার নদে ফেলা হচ্ছে। এছাড়া ৫৫ ভাগের সেপটিক ট্যাংকের মানববর্জ্য কোনো না কোনোভাবে কুমার নদে ফেলা হচ্ছে। ফলে পানি বিষাক্ত হচ্ছে। পৌর এলাকার বাসিন্দা মাজেদুল, স্বপন, মিলন জানান, আগে তারা কুমার নদে গোসল করতেন। এখন পানিতে ময়লা আর দুর্গন্ধ থাকায় নদে গোসল করেন না। ময়রাপট্টির ব্যবসায়ী নাছির ও ইসমাইল জানান, বাজারের অনেকে নদে ময়লা ফেলছে। ফলে নদটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, কুমার নদ দখলমুক্ত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর