দুপুর একটা। কুমিল্লার তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই। অশোকতলা বিসিক গেটে প্রায় ৪০০ নারী-পুরুষের লম্বা লাইন। কারও পরনে পুরনো শাড়ি, ছেঁড়া গেঞ্জি, ময়লাযুক্ত প্যান্ট আর লুঙ্গি। তাপ থেকে বাঁচতে কারও মাথায় বস্তা। গতকাল কুমিল্লা নগরীর অশোকতলায় খাদ্য অধিদফতরের বিশেষ ও ওএমএস’র ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রির সময় দেখা যায় এমন দৃশ্য। সরেজমিন জানা যায়, চাল কেনার জন্য সকাল সাতটা থেকে লাইনে দাঁড়াতে থাকে অশোকতলার কম ভাগ্যবান মানুষ। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় চাল বিক্রি। এ সময় মানুষের ভিড়ে বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ, খাদ্য অধিদফতর ও ডিলারের লোকজনকে পরিস্থিতি সামাল দিতে বারবার হিমশিম খেতে হয়। খাদ্য অধিদফতর কুমিল্লা অঞ্চল সূত্র জানায়, এ এলাকার চারশজন ব্যক্তির কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে পাঁচ কেজি করে চাল বিক্রি করা হয়। গতকাল নির্ধারিত দুই টন চাল বিক্রি হয়। ৩টা পর্যন্ত চাল বিক্রির কথা থাকলেও দুপুর দেড়টার দিকে চাল শেষ হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘক্ষণ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা অন্তত তিনশ জনকে চাল না কিনে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয়। চাহিদা অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করতে পারায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে স্থানীয় লোকজন জানান। এদিকে একই দৃশ্য দেখা গেছে কুমিল্লা নগরীর অশোকতলা চৌমুহনী এলাকায়। সেখানে অনেকে রোদে দাঁড়াতে না পেরে তার স্থানে রাস্তায় বস্তা দিয়ে সিরিয়াল ঠিক রেখেছেন। তবে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে চাল না পেয়ে ফিরে গেছেন অনেকে। অশোকতলায় দায়িত্বে থাকা খাদ্য অধিদফতর কুমিল্লা অঞ্চলের সহকারী উপ-পরিদর্শক অঞ্জন কুমার সাহা জানান, অশোকতলাসহ কুমিল্লার বিভিন্ন পয়েন্টে খাদ্য অধিদফতর ও ওএমএস কর্তৃক ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। চাল পর্যাপ্ত মজুদ আছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ বাড়ানো হবে। ডিলার আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি ৪০ বস্তা চাল পেয়েছি। এ চাল ১০ টাকা দরে বিক্রি করছি। যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ বিক্রি করব। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা এস এম কায়ছার আলী বলেন, নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭ জন ডিলার চাল বিক্রি করছেন। চাহিদা অনুসারে বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানান।