সোমবার, ৩১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

অচল বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

অচল বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর

দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা অচল হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে এ বন্দরে। কভিট-১৯ থেকে নিজেদের সতর্ক এবং নিরাপদ রাখতে ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের অন্য একটি পক্ষ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখার পক্ষে। তারা বলেছেন ইগোর দ্বন্দ্বে অচল হয়ে পড়েছে বন্দরটি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের দুটি পক্ষের আত্মসম্মান বজায় রাখার প্রতিযোগিতায় এমনটি ঘটছে। বন্দর খোলা রাখার পক্ষের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ গত ১০ মে ঈদের ছুটির জন্য ১১ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি চিঠি দেয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান খান। ১০ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তটি মানতে পারেনি ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ। তাদের দাবি সারা  দেশের অন্যান্য বন্দর যে কয়েকদিন বন্ধ রাখা হবে সেভাবেই এই বন্দরও বন্ধ রাখা হোক। পরে সভাপতি তফিজুল ইসলাম ১২ মে থেকে ১৬ মে ৫ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে একটি সংশোধনী চিঠি প্রদান করে। এই চিঠির প্রেক্ষিতেই ১৭ মে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। সেই সঙ্গে শুরু হয় ইগোর দ্বন্দ্ব।  বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরতি-খুদা মিলন ভারত থেকে আসা কয়েকটি পাথর বোঝাই ট্রাককে ফিরিয়ে দেয়। এ সময় তিনি বলেন করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে স্থানীয় অধিবাসীরা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করতে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় কার্যক্রম। গত ১৯ মে আবার আমদানি কার্যক্রম শুরু হলে ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য তৎপর হয়। তারা চায় কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাক। ওই দিনই কভিড-১৯ এবং ভারতীয় ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কুদরতি-খুদা মিলনের নেতৃত্বে কিছু ব্যবসায়ী জেলা প্রশাসকের কাছে বন্দরটি বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানান। পরে আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন একটি চিঠির মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য সব ব্যবসায়ীকে আহ্বান জানান।

 তবে এই সিদ্ধান্ত মানতে চান না কিছু ব্যবসায়ী, সিএনডি এফ এজেন্ট এবং শ্রমিকরা। তারা চান বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু থাক। বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি তফিজুল ইসলাম জানান জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় বাস্তব সম্মত নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে এখনো কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। তবে ইগোর বিষয়টি মানতে নারাজ চেয়ারম্যান কুদরতি-খুদা-মিলন। এলাকাগুলোতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আমরা আতঙ্কে আছি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করেছে, বন্দর খোলা আছে। তারপরও যদি কেউ আমদানি-রপ্তানি করতে চায় করতে পারেন। আমদানিকারক আব্দুল লথিব তারিন জানান যেহেতু সীমান্ত জেলাগুলোতে করোনাভাইরাস এবং ভারতীয় ব্লাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বাড়ছে। তাই আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখাই ভালো। যদি স্বাভাবিক হয় তবে আবার না হয় শুরু করা যাবে। তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু জানান, ভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা যায়। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান খান বাবলা জানান, কোনো ব্যবসায়ী আমদানি করতে চায় এমনটা শোনা যায়নি। সব ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা ঝুঁকি নিতে চাননা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, বন্দর খোলা আছে। ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানি করতে পারেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। 

সর্বশেষ খবর