মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পায়রা সেতুতে বদলে যাবে পটুয়াখালী

সঞ্জয় দাস লিটু, পটুয়াখালী

পায়রা সেতুতে বদলে যাবে পটুয়াখালী

পায়রা সেতুতে বদলে যাবে বরিশাল বিভাগ। পটুয়াখালী-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে নির্মাণাধীন লেবুখালীর পায়রা নদীর ওপর পায়রা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। কর্ণফুলী সেতুর আদলে নির্মিত এই সেতুটি ইতিমধ্যে অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শেষ করে এখন চলছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও রংকরণের কাজ। গত শনিবার সেতুর সর্বশেষ অগ্রগতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব। পরে তিনি জানান প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলেই সেতুর উদ্বোধন এবং তখনই যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল হালিম জানান, বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের দুমকি উপজেলার লেবুখালী এলাকার পায়রা নদীর ওপর ২০১৬ সালে পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ইতিমধ্যে মূল সেতুর ৯৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া নদী শাসন প্রকল্পের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই সেতুতে বেশ কিছু নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশেষ করে নদীর মধ্যে এবং পাশে থাকা পিয়ারে যাতে কোনো নৌযান ধাক্কা দিতে না পারে। সে জন্য পিয়ারের পাশে নিরাপত্তা পিলার স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি জানান, চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘লনজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন’ সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছে। মোট এক হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯.৭৬ মিটার প্রস্থের এই ব্রিজটি কর্ণফুলী সেতুর আদলে এক্সট্রা ডোজ ক্যাবল দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে নদীর মাঝ খানে একটি মাত্র পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, এই সেতুর কয়েকটি বিশেষত রয়েছে। এই সেতুটি দেশের মধ্যে লং স্প্যান, সেটি হলো এই সেতুটিতে ২০০ মিটার করে দুটি স্প্যান রয়েছে। আর একটি হলো ১৭ এবং ১৮ নম্বর পিয়ারের পাইল ১৩০ মিটার যা দেশের সর্বোচ্চ গভীরতম পাইল। এ ছাড়া বজ্রপাত কিংবা ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেতুর কোনো ক্ষতি হলো কিনা সেটি মনিটরিং করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে দেশের কোনো সেতুতে এই প্রথম এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে বর্ষা  মৌসুম হওয়ায় কাজে একটু সময় বেশি লাগছে।  প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, চট্টগ্রামের কর্নফুলীর সেতুর পর এটি দেশের দ্বিতীয় সেতু যা এক্সটা ডোজ কেবল সিস্টেম এ তৈরি করা হয়েছে। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট, ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ বিনিয়োগে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৭০ কোটি টাকা। 

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম পায়রা সেতু এলাকা পরিদর্শন করে এর সর্বশেষ অগ্রগতির বিষয়ে তিনি জানান, সব কিছু পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে চলছে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলেই যে কোনো দিন এটি উদ্বোধন করতে পারেন তিনি। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পায়রা সেতু। সেতুটি এ অঞ্চলসহ সারাদেশের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের পথ খুলে দেবে। পায়রা ও পদ্মা সেতু চালু হলে বিশেষ করে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে সারা দেশের ফেরিবিহীন যোগাযোগ শুরু হবে। জনগণের ফেরি পারাপারে তখন আর কোনো ভোগান্তি থাকবে না।

সর্বশেষ খবর