শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

হিলিতে শীতজনিত রোগের প্রকোপ

হিলি প্রতিনিধি

হিলিতে শীতজনিত রোগের প্রকোপ

দেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের হিলিতে (হাকিমপুর) এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শীত জেঁকে বসেছে। সকালে কুয়াশা ঝরছে। সঙ্গে হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। শীতের কারণে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে ঠান্ডা পানি পান পরিহারসহ গরম কাপড় পরার পরামর্শ তাদের। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত একসপ্তাহ ধরেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গড়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন করে শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। আগে যেখানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছিলেন। রোগীদের বাড়তি চাপের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকসহ নার্সরা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়েজ উদ্দিন বলেন, হিলিতে গত কয়েকদিন ধরেই প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে সঙ্গে কুয়াশা ঝরছে যার কারণে এর মধ্যে বের হওয়ায় আমার শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। শ্বাস নিতে খুব সমস্যা হচ্ছিল বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। অপর রোগী বেলাল হোসেন বলেন, আমরা গরিব মানুষ গায়ে খেটে খায় খুব কষ্ট করে দিনপথ চলতে হয় আমাদের। কয়েকদিন ধরে ঠান্ডা পড়ায় এর মধ্যে কাজে বের হয়ে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি দেখা দিয়েছে। দুই দিন ধরে অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে সমস্যা হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন কাজ না করায় কোনো খরচপাতি দূরে থাক কোনো ওষুধপাতি কিনতে পারছি না। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। অপর রোগী ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা দিন আনা দিন খাটা মানুষ যার কারণে আমাদের কাজে বের হতেই হয়। কিন্তু শীত ও কুয়াশার মধ্যে কাজে বের হওয়ায় ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ বার পাতলা পায়খানা হচ্ছে। এখন এই অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতালে শিশুকে নিয়ে আসা সুরমা খাতুন বলেন, এই যে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে সঙ্গে কুয়াশা যার কারণে বাচ্চাদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশিসহ শীতজনিত নানা রোগ হচ্ছে। শিশুরা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে, খেলাধুলা করছে না, শরীর দুর্বল হয়ে অবস্থা খারাপ হচ্ছে। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়ায় শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে যার কারণে বাচ্চাদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসকদের কাছে আসতে হচ্ছে। শিশুকে নিয়ে আসা অপর মা হালিমা বেগম বলেন, আমার বাচ্চার ডায়রিয়া হওয়ার কারণে দুই দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। খুব ঠান্ডা পড়েছে সঙ্গে কুয়াশা পড়ায় বাচ্চার সমস্যা হয়েছে। ডাক্তার দেখে ওষুধ দিয়েছে সেটি খাওয়াচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ আগের চেয়ে একটু কমেছে। একেবারে ভালো হয়নি আরও হয়তো দুন্ডএক দিন থাকতে হবে। হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাকিব হাসান বলেন, গত সাত দিন ধরেই দেখেত পাচ্ছি শীতের প্রকোপ অত্যন্ত বেড়েছে সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস বইছে। যার কারণে অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত যেসব রোগ রয়েছে এসব রোগে আক্রান্ত অনেক রোগী পাওয়া যাচ্ছে। সামনের দিনে শীতের মাত্রা আরও বাড়তে পারে তাই যতটা পারা যায় শীত থেকে বেঁচে থাকতে হবে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে, শীতকালে প্রচুর শাকসবজি পাওয়া যায় সেগুলো খেতে হবে, ঠান্ডা পানি পান পরিহার করাসহ শীত যেন না লাগে এ জন্য গরম কাপড় পরা, বিশেষ করে শিশুদের যেন ঠান্ডা না লেগে সে বিষয়ে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর