রবিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

গ্রামীণ জনপদ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে টাকু

আবদুল বারী, নীলফামারী

গ্রামীণ জনপদ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে টাকু

নীলফামারীর গ্রামীণ জনপদ থেকে হারিয়ে যাওয়া বাংলার ঐতিহ্যের অন্যতম পাট থেকে চিকন সুতলি-দড়ি পাকানোর সনাতন পদ্ধতি টাকুর। যা আঞ্চলিক ভাষায় টাকুর বা টাকুরি নামে পরিচিত। বাঁশের চিকন কাঠি ও দুই টুকরা বাঁশের বাতা কেটে ছোট করে মাঝখানে কিছুটা ছিদ্র করে তৈরি করা হতো টাকুর। ঊরুর ওপর রেখে হাতের তালুতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পাটের আঁশ থেকে চিকন সুতলি-দড়ি পাকানো হতো। এক সময় যন্ত্রবিহীন যুগে চিকন সুতলি-দড়ি পাকাতে টাকুরের কোনো বিকল্প ছিল না। নীলফামারীর গ্রামাঞ্চলের গৃহস্থালি পরিবারগুলোর সাংসারিক প্রয়োজন মেটাতে অনেকেই এ ক্ষুদ্র শিল্পকর্মের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করত। তবে বর্তমানে সনাতন পদ্ধতির টাকুর বিলুপ্তপ্রায়। কিশোরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের সিট রাজিব, বাংলাবাজার, দুন্দীপাড়া গ্রামের মাদুর (সপ) বুননে চিকন সুতলির প্রয়োজনে টাকুরের বিকল্প না থাকায় প্রাচীন এ ঐতিহ্যকে আজও আঁকড়ে ধরে আছেন ওই এলাকার কারিগররা। নীলফামারী সদর উপজেলার তরণীবাড়ি গ্রামের কৃষক কামিনী কান্ত রায় বলেন, বাপ-দাদার সময় দেখেছি বাঁশ কেটে তা থেকে চিকন কাঠি ও বাতা কেটে ছোট করে টাকুর তৈরি করা হতো। তবে বর্তমানে এখন আর তেমন একটা চোখে পড়ে না। কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাদুর বুননের কারিগর আবদুর সাত্তার বলেন, বাংলার ঐতিহ্যের পাশাপাশি মাদুর বুননে সুতলি ব্যবহারে টাকুর ধরে রেখেছি। ডোমার বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাবেদুল ইসলাম সানবীম বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে সনাতন পদ্ধতির গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী টাকুর। তারপরও  অনেক কারিগর বাংলার ঐতিহ্যের অস্তিত্ব ধরে রেখেছে।

সর্বশেষ খবর