শিরোনাম
শনিবার, ২৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ভাসমান ড্রাম-সেতুতে দুঃখ ঘুচল ১৫ হাজার মানুষের

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

ভাসমান ড্রাম-সেতুতে দুঃখ ঘুচল ১৫ হাজার মানুষের

সতী নদীর ওপর ভাসমান ৫০ ফুট দীর্ঘ ড্রাম সেতুতে দুঃখ ঘুচল শিক্ষার্থীসহ ১৫ হাজার মানুষের। গত এক বছর শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী অতি কষ্টে পানিতে ভিজে চলাচল করেছেন। ভাসমান এ সেতুতে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মুখে হাসি ফুটেছে। ড্রাম ও বাঁশের মাচা দিয়ে ৫০ ফুট দূরত্বে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের জন্য সাঁকো তৈরি করে অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ইব্রাহীম আলী নামে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের সতী নদীর ওপর ড্রাম সেতু গতকাল উদ্বোধনের পর থেকে ওই এলাকার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াত শুরু হয়। এতে খুশি পুরো গ্রামবাসী। জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের শালমাড়া ঘোনাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর স্কুল যাওয়া আসার একমাত্র পথ সতী নদী। নদী পার হয়েই শিক্ষার্থীসহ এলাকার মানুষকে হাটবাজার করতে হয়। সবার কষ্টের কথা চিন্তা ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড্রাম সেতু তৈরির উদ্যোগ নেন। এর পর তিনি নিজস্ব ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ২০টি ড্রাম ও শতাধিক বাঁশের সমন্বয়ে একটি ভাসমান বাঁশের সেতু নির্মাণ করেন। সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় এলাকার মানুষ খুবই খুশি। তার এমন মহতী উদ্যোগ এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম আলী বলেন, ড্রাম ও বাঁশের মাচা দিয়ে ৫০ ফিট দূরত্বে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের জন্য একটি সাঁকো তৈরি করি। কারণ কিছুদিন থেকে সতী নদীর ওপর নির্মিত সেতু ভেঙে পড়ে আছে। নদীর দুই পাশে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, মাদরাসার কয়েক শ শিক্ষার্থী কোমর পানিতে নেমে আলাদা পোশাক ব্যবহার করে যাতায়াত করে। আমার স্কুলের ছাত্রছাত্রী ভয়ে ভয়ে যাতায়াত করে। এ জন্য আমি নিজ উদ্যোগে ও কয়েকজন বন্ধু মিলে ২০টি ড্রাম ও ১০০টি বাঁশ দিয়ে ৫০ ফুট বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করি। এতে প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। নওদাবাস দাখিল মাদরাসার সুপার মো. রুহুল আমিন বলেন, শালমারা ঘাটে একটি সেতু ছিল সেটি হঠাৎ করে ভেঙে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়। ভাঙার পর থেকে মানুষের খুব অসুবিধা। স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবদুর রশিদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এক বুক পানি পেরিয়ে বাড়ি ফিরি অনেক কষ্ট আর দুর্ভোগ নিয়ে। এখন ড্রাম সেতু হওয়ায় আমরা খুব খুশি। এখন শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই স্কুলে যেতে পারছে। কলেজ শিক্ষার্থী সজল বলেন, আমি সাইকেল ঘাড়ে করে এক বুক পানি পাড় হয়ে এলাম। সেতুটি ভাঙার পর দুর্দশায় ভুগছি। দেখার কেউ নেই। চেয়ারম্যান-মেম্বার কেউ দেখেও না। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস আলম  বলেন, সতী নদীর উপর আগে একটি সেতু ছিল সেটি ভেঙে যাওয়ার কারণে এলাকার মানুষ কষ্টে পারাপার করছেন। ওই সেতুর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। নির্মাণ কাজও শিগগিরই শুরু হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর