চলছে বোরোর ভরা মৌসুম। এমন সময়েও অস্থির দিনাজপুরের হিলিতে চালের বাজার। গত কয়েক দিনে প্রকারভেদে কেজিপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ৬-৭ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। অটো মিলমালিকরা বিক্রি বন্ধ রেখে চাল মজুদ করায় দাম বেড়েছে এমন দাবি ব্যবসায়ীদের। হিলি বাজারে চাল কিনতে আসা ভ্যানচালক গোলজার হোসেন বলেন, সারা দিন ভ্যান চালিয়ে ২০০-২৫০ টাকা আয় হয়। যে হারে চালের দাম বাড়ছে তাতে চাল কিনতেই সব টাকা শেষ। বাকি খরচ কীভাবে চালাব। তিনি জানান, যে চালের কেজি ৪০-৪৫ টাকা ছিল তা বেড়ে ৫৫ টাকা হয়েছে। চালের দামটা একটু কমলে অন্তত আমরা ডালভাত খেয়ে বাঁচতে পারতাম। মেহেরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, নতুন ধান উঠেছে। এই সময়-তো চালের দাম কমার কথা উল্টো বাড়ছে।
আমাদের মতো মানুষের সংসার চলানো খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে যেখানে তিন কেজি চাল কিনতাম এখন দুই কেজি কিনে আধপেট খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। হিলি বাজারের চাল ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, প্রতিবছর এমন সময় চালের দাম কমে কিন্তু এবার ব্যতিক্রম হয়েছে। এর কারণ হলো ধানের দাম বৃদ্ধি। যে ধানের মণ হাজার টাকার নিচে ছিল সেই ধান বর্তমানে ১১০০-১১২০ টাকা মণ দরে বিক্রি চলছে। সেই সঙ্গে আবহাওয়া খারাপ থাকায় এবং শ্রমিক সংকটের কারণে হাসকিং মিলগুলো চাহিদামতো চাল উৎপাদন করতে পারছে না। আমাদের যেমন বাড়তি দামে চাল কিনতে হচ্ছে তেমনি বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ভারত থেকে চাল আমদানিসহ অসাধু মিল মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া গেলে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেও জানান তিনি। হিলি বাজারের চাল বিক্রেতা সুব্রত কুণ্ডু বলেন, চালের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ৬-৭ টাকা করে কেজিতে বেড়েছে। এর কারণ হলো লোকাল মিলগুলো সব বন্ধ। অটো মিল মালিকরা যা চাচ্ছে সেটাই করছে। ভরা মৌসুমেই যদি চালের দাম বাড়ে তাহলে আরও-তো দিন পড়ে আছে। হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম নুরুল আলম খান বলেন, এ বন্দর দিয়ে বর্তমানে সাধারণ যে মোটা চাল সেটা আমদানি একেবারেই হয় না। মাঝেমধ্যে বাসমতি চাল আমদানি হয়। তিনি জানান, গত অর্থবছরে সরকার আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেওয়ায় বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছিল। বর্তমানে ওই সুযোগ না থাকায় আমদানি বন্ধ রয়েছে। হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, কারণ ছাড়াই কেউ যেন কোনো পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে সেজন্য নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রেখেছি। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযান চালানো হচ্ছে। দাম বাড়ানোর কোনো অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।