শিরোনাম
বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

খড়-ভুসির দাম বেড়েই চলেছে

গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

বোয়ালমারী উপজেলায় গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খড়-ভুসির দাম দিন দিন বাড়ছে। অব্যাহত দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন খামারি ও সাধারণ কৃষক। অনেকে বাধ্য হয়ে গরু বিক্রি করে ফেলছেন। এ ছাড়া দানাদার খাদ্য গাভিকে খাওয়ানোর পর এক কেজি দুধ উৎপাদন করতে যে খরচ তার অর্ধেক দামে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে লোকসানের মুখে পড়ছেন খামারিরা। জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলায় ছোট-বড় বেশ কিছু খামার রয়েছে। খামারিরা গরুকে খড় ও ঘাসের পাশাপাশি গম, খেসারি ও বুটের ভুসিসহ বিভিন্ন দানাদার খাবার খাওয়ান। গত তিন মাসের ব্যবধানে সব গোখাদ্যের দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতি বস্তায় বেড়েছে ১৫০-৩০০ টাকা। গোখাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দুধ উৎপাদন ও পশু মোটাতাজাকরণে ব্যয় বেড়েছে কৃষক-খামারিদের। তারা গবাদি পশু পালনে হিমশিম খাচ্ছেন।  জানা যায়, কুঁড়া-ভুসির পাশাপাশি ধানের খড় গরুর উৎকৃষ্ট খাদ্য। কুঁড়া-ভুসির সঙ্গে খড় কেটে ভিজিয়ে গরুকে খাওয়ানো হয়। গরুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য এই খাদ্যের বিকল্প নেই। তাই খামার বা ব্যক্তিগতভাবে পশু পালনকারীদের সারা বছরের জন্য খড়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এখন এক বছরের জন্য খড় কিনে রাখছেন তারা। খড় ক্রেতার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে। খড় কিনতে অনেকটা প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে খামারিসহ সাধারণ মানুষকে। নিজ এলাকার বাইরে থেকেও খড় কিনে আনতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচও যুক্ত হচ্ছে।

সূত্র মতে, বোয়ালমারী উপজেলায় কয়েক বছর ধরে বাড়ছে গরুর খামার। বিশেষ করে যুবকদের একটা অংশ খামার প্রকল্পে ঝুঁকছেন। কেউ গরু মোটাতাজাকরণ কেউ দুগ্ধজাত খামার করছেন। এ ছাড়া এই এলাকায় ধান চাষ আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। আমনের ফলন তেমন ভালো না হওয়ায় সংকট দেখা দেয় খড়ের। গরু পালন করেন এমন কয়েকজন বলেন, একটি গরুর সারা বছরের শুকনা খাবারের জন্য খড়ের বিকল্প নেই। তিনবেলা নিয়ম করে অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি খড় দিতে হয়। কুঁড়া-ভুসি, ফুটানো চাল মিলিয়ে সঙ্গে খড় কেটে পানিতে ভিজিয়ে খাওয়ানো হয়। খামারে খড়ের প্রয়োজনীয়তাই বেশি। প্রত্যেক খামারি বা সাধারণ গেরস্থদের কমপক্ষে এক বছরের জন্য খড় কিনে রাখতে হয়। এ মৌসুমে কিনে আগামী কোরবানি পর্যন্ত খড়ের জোগান দিতে হয় খামারে। হাচান নামে একজন খামারি জানান, তার ১০টি গরু আছে। কিছু গরু দুগ্ধ জাতের। নিজ এলাকায় খড়ের দাম বেশি হওয়ায় অন্য এলাকা থেকে খড় কিনে এনেছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, বিদেশি খাবারের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে, দেশে উন্নত জাতের ঘাসের আবাদ বাড়াতে হবে। এতে দেশীয় খাবারেই গবাদিপশুর পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা যাবে।

সর্বশেষ খবর