শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিলের ইজারা নিয়ে নদী দখল

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বিলের ইজারা নিয়ে নদী দখল

মাছ শিকারের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে নদীতে পাতা ফাঁদ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন নাসিরনগরের বিল আটউড়ি জলমহালের ১৩টি দাগে ৫৩৬.০৩ একর জলাশয় মৎস্যজীবী সমিতির কাছে ইজারা দিয়েছে। ইজারাদাররা চুক্তি ভঙ্গ করে কয়েকগুণ বেশি টাকা দিয়ে সাব-লিজ দিয়েছেন। শর্ত অনুযায়ী লিজ গ্রহীতা কোনোভাবেই সাব-লিজ অথবা অন্য ব্যক্তিকে ব্যবহার করতে দিতে পারবেন না। অভিযোগ রয়েছে, বিল ইজারা দেওয়া হলেও নদীর বিভিন্ন অংশ দখল নিয়ে অবৈধ ফাঁদ পেতে ইচ্ছেমতো মাছ ধরছেন তারা। এতে প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত হচ্ছেন মাছ শিকার থেকে। এ ছাড়া নৌযান চলাচলের সময় মাছ ধরার জালের ক্ষতি দেখিয়ে নৌকা মালিকদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা। জানা যায়, জেলা প্রশাসন গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বার্ষিক ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৫০২ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে বাংলা ১৪২৮ থেকে ১৪৩০ সাল পর্যন্ত বিল আটউড়ি জলমহাল ইজারা দেয় নাসিরনগর ভিটাডুবি ধীবর সমিতির কাছে। সমিতির লোকজন চুক্তি লঙ্ঘন করে ইচ্ছেমতো লঙ্গন ও ধলেশ্বরী নদী দখল করে মাছ শিকার করছেন। দুটি নদীতে যত্রতত্র ফাঁদ পেতে মাছ ধারায় বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌ-চলাচল। স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, নাসিরনগর মৌজার সাবেক ১২২২ দাগের ৯.৭ একর, নাসিরপুর মৌজার সাবেক ৬২৯ দাগের ৪.৭, ৬৬৯ দাগের ৫৭.৫৭ ও ৩৯১ দাগের ৬.৬০ একর এবং ভলাকুট মৌজার সাবেক ৩১৭৯ দাগের ৭৫.৫০ একর, ৪৭৭১ দাগের ৩২.৯৮ একর, ২৫৯৪ দাগের ২৮.০৫ একর ও ২৫৯৫ দাগের ৭৫.৫০ একরসহ নদীর অংশ দখল করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, নাসিরনগর উপজেলা সদর থেকে ভলাকুট, গোয়ালনগর ও চাতলপারের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম লঙ্গন ও ধলেশ্বরী নদী। এ দুই নদী পথ দিয়েই হাওরবেষ্টিত তিন ইউনিয়ন চাতলপাড়, ভলাকুট ও গোয়ালনরগরের ৮০ হাজার মানুষ অষ্টগ্রাম, ইটনা-মিটামইন, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, লাখাই, হবিগঞ্জ ও ভৈরব যাতায়াত করে। দখলদাররা নদীর বিভিন্ন অংশ দখল করে অবৈধভাবে মাছ শিকার করায় চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে নৌযান চলাচল। স্থানীয় সূত্র জানায়, নদীর বিভিন্ন অংশে অবৈধভাবে মাছ শিকারের জন্য শতাধিক বেড় জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ইজারা দেওয়া বিল বাক-লঙ্গন ও আটউড়ির জলাশয় ছাড়াও নাসিরনগর হয়ে ভলাকুট ও চাতলপাড়ের লঙ্গন, ধলেশ্বরী নদীর সম্পূর্ণ অংশ বাঁশ দিয়ে মাছ ধরার জন্য দখল করে রেখেছে। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ইউএনও ফখরুল ইসলাম বলেন, নদীর দখল ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছি। অন্যথায় লিজ বাতিলসহ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর