শিরোনাম
শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সড়কপথে যাতায়াতে অপেক্ষার শেষ কবে শাল্লাবাসীর?

মাসুম হেলাল, সুনামগঞ্জ

সড়কপথে যাতায়াতে অপেক্ষার শেষ কবে শাল্লাবাসীর?

যখন বলা হচ্ছে ‘দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে’ সেই সময়ও এমন একটি উপজেলা রয়েছে যেটি এখনো যুক্ত হয়নি সড়কপথে। হাওর অধ্যুষিত এ উপজেলাকে সড়কপথে যুক্ত করার সরকারি একটি প্রকল্প ইতোপূর্বে অসমাপ্ত রেখেই সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে হেমন্তে কাঁচা, আধাপাকা সড়কে মোটরসাইকেল নাহয় হাঁটা এবং বর্ষায় নৌযানই এখানকার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। গ্রীষ্মকালে যখন কাঁচা রাস্তাগুলো কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে তখন হাঁটা ছাড়া যাতায়াতের কোনো বিকল্প থাকে না। ৫৬ দশমিক ০৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের উপজেলাটি ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৪৩ মানুষের বসবাস। তখন রোগী, শিশু, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী সবাইকে পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে অহরহ। সড়ক ও জনপথ সূত্র জানায়, ২০১০ সালে সুনামগঞ্জ সফরে এসে দিরাই থেকে শাল্লাকে সড়ক পথে যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের বছর থেকে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় ২০ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ। পরবর্তীতে সড়কের কোনো কোনো অংশ পাকাকরণ করা হয়। ১১টি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সেগুলো জনগণের কোনো কাজে আসেনি। জানা যায়, নির্মাণ কাজের ধীরগতি ছিল সড়ক নির্মাণের শুরু থেকেই। পরে ২০১৭ সালে অসমাপ্ত রেখে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজের সমাপ্তি টানে সওজ। অসমাপ্ত সড়ক মানুষের কোনো উপকারে আসেনি। শাল্লাকে সড়ক পথে যুক্ত করার পরিকল্পনা পিছিয়ে গেলে হতাশ হন সাধারণ মানুষ। যাতায়াতের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। উপজেলার গিরিধর উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সোনালি আক্তার বলেন, পাকা সড়ক না থাকায় প্রতিদিন দেড়ঘণ্টা করে তিন ঘণ্টা হেঁটে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। বাড়িতে গিয়ে হোমওয়ার্ক করা কঠিন হয়ে পড়ে। সড়কটি পাকা হলে এত কষ্ট করতে হতো না। সহজে স্কুলে আসা-যাওয়া করা যেত। আনন্দপুর গ্রামের আশিঊর্ধŸ ননীগোপাল বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি দিরাই-শাল্লা রোড হবে। আশা ছিল এটি দেখে যাব। আমার মতো বৃদ্ধ যদি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি, হাসাপাতালে নেওয়ার কোনো বাহন নেই। এদিকে, দিরাই-শাল্লা সড়ক নির্মাণের কাজ অসমাপ্ত রেখে নতুন করে আরেকটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। গেল বছরের গত ১৪ জুন মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরীগঞ্জ জেলা মহাসড়কের দিরাই-শাল্লা অংশ পুনর্নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৬২৮ কোটি টাকা। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, দিরাই-শাল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক পুনর্নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান হয়েছে। এখন কার্যাদেশ দেওয়া হবে। ৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণসহ সেতু, কালভার্ট নির্মাণ করা হবে এ প্রকল্পের আওতায়। আশা করছি আামরা দ্রুত কাজটির বাস্তবায়ন শুরু করতে পারব।

সর্বশেষ খবর