বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিনিয়োগ করে নিঃস্ব শত শত গ্রাহক

১০৫ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এনজিও কর্তৃপক্ষ

মো. রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

বিনিয়োগ করে নিঃস্ব শত শত গ্রাহক

সাংবাদিকের কাছে অভিযোগ করতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভুক্তভোগীরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সমাজ সেবা অধিদফতরের নিবন্ধন নিয়ে গড়ে ওঠে মধুমতী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা। এমআরএর অনুমোদন না নিয়ে এনজিওটি শুরু করে সঞ্চয় আদায় ও ঋণ কার্যক্রম। তারা প্রায় ৩৫ হাজার গ্রাহক সৃষ্টি করে উচ্চহারে লাভের প্রলোভন দিয়ে সংগ্রহ করে প্রায় ১০৫ কোটি টাকা। এরপর মধুমতী এনজিওর টাকা হাতিয়ে পরিচালক মাসুদ রানা গড়ে তোলেন মধুমতী গ্রুপ। গ্রুপের নামে বিভিন্ন পণ্য বাজারজাতের ব্যবসা শুরু হয়। এরপর মধুমতীর গ্রাহকরা তাদের লগ্নিকৃত টাকা ফেরত চাইলে মাসুদ রানা কালক্ষেপণ করতে থাকেন। তিনি গ্রাহকদের হাত থেকে বাঁচতে নাটক সাজিয়ে অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে আটক হন। একপর্যায়ে ১০৫ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হন মাসুদসহ তার নিকট আত্মীয় যারা এনজিওর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। এনজিওটিতে লগ্নি ১০৫ কোটি টাকা ফেরতের আশায় হাজার হাজার গ্রাহক জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এ ঘটনায় এনজিওর মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও পুলিশ তাদের ধরছে না এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। জমানো টাকা হারিয়ে সদর উপজেলার বাসুদেবপুর এলাকার গৃহবধূ খালেদা খাতুন বলেন, জমি কেনার জন্য অনেক কষ্টে টাকাগুলো মধুমতী সমাজ উন্নয়ন সংস্থার বাসুদেবপুর শাখায় রেখেছিলাম। টাকা নেওয়ার সময় তারা বলেছিল, যখন চাইবেন তখনই ফেরত দেওয়া হবে। পরে টাকা চাইতে গেলে তারা ফেরত দিচ্ছেন না। স্বামী এখন আমাকে টাকার জন্য ডিভোর্স দিতে চাইছেন। প্রশাসনের কাছে বারবার গেলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সদর উপজেলার সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের কলেজছাত্রী লতিফা খাতুন বলেন, আমার কোনো ভাই নাই। বাবার উপার্জনের ৬ লাখ টাকা মধুমতী এনজিওতে জমা রেখেছিলাম। বাবা অসুস্থ হওয়ার পরেও এখন চিকিৎসার জন্য টাকা তুলতে পারছি না। বারবার এনজিও অফিসে ঘুরেও দিব দিচ্ছি বলে না দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। এখন আমরা অসহায় দিন যাপন করছি। মধুমতী সমাজ উন্নয়ন সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার এসলাম হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। মালিকপক্ষ পালিয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন মাঠকর্মীরা। তিনিও এর সুষ্ঠু সমাধান দাবি করেন। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন, অবৈধ এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ করছে প্রশাসন।

সর্বশেষ খবর