বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

চরের সবজিতে মঙ্গা জয়ের হাসি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

চরের সবজিতে মঙ্গা জয়ের হাসি

তিস্তার বালুচরে নানা সবজি উৎপাদন করছেন চাষিরা। এক সময়ের পরিত্যক্ত জমি এখন কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ। কৃষকরা বলছেন, এক সময় তাদের মঙ্গা ছিল। সেই মঙ্গা এখন জয় করেছি। চরের ফসলে আমরা দেখছি মঙ্গা জয়ের হাসি। লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া তিস্তার তিন শতাধিক বালুচরে কয়েক বছর ধরে সবুজ বিপ্লব ঘটছে। চরের জমিতে এখন চাষ হচ্ছে আলু, মিষ্টি কুমড়া, মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন, স্কোয়াস, ওলকপি, গম, বাদম, ভুট্টা, গাজরসহ নানা সবজি। তপ্ত বালুচরে সবজির আবাদ করে তাই কৃষকরা দেখছেন অর্থনৈতিক মুক্তির পথ। তিস্তার চরে বেলে দোআঁশ মাটিতে চাষিরা স্বল্প খরচে ফলিয়েছেন সোনার ফসল। বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় লাভবান হবে এমন স্বপ্ন বুনছেন তারা। কৃষকরা জানান, বেলে-দোআঁশ মাটিতে বেশি সার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। পোকামাকড়ের আক্রমণও কম। শুধু পানি পেলেই চরে সব ফসলের আবাদ ভালো হয়। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও প্রান্তিক কৃষকদের সার-বীজসহ সব রকম সহায়তা করা হয়। বিশেষ করে চরের কৃষকরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখছেন না। তথ্যমতে, লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় তিস্তায় জেগে ওঠা চরের জমির পরিমাণ ২৬ হাজার ৬৩ হেক্টর। এর মধ্যে আবাদি ২১ হাজার ৯৪৮ হেক্টর। আদিতমারীর নদী তীরবর্তী মহিষখোচা ইউনিয়নের বালাপাড়া, কুটিরপাড়, কালমাটি, আনন্দবাজার, কালিগঞ্জের রুদ্রেশ্বর, কাকিনা, মহিষামুরি, ইশোরকুল এসব চরে প্রচুর পরিমাণে আবাদ হয়েছে। ভুট্টা চরের প্রধান ফসল। নদী গবেষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলছেন, বৈশ্বিক মন্দার এ সময়ে চরের কৃষক সংগ্রাম করেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যদি নদী বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে খনন করা যেত তাহলে কৃষকের পাশাপাশি সব পেশার মানুষ তিস্তার সুফল পেত। তিস্তার চরে চাষাবাদ করা কৃষক হেলাল মিয়া বলেন, খরস্রোতা তিস্তার কারণে অনেকে এলাকা ছেড়েছেন। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বন্যা আর নদীভাঙন ও শুষ্ক মৌসমে ধু-ধু বালু চরের           কারণে অনেকে নিঃস্ব হয়েছেন। লোকজন তিস্তার হাত থেকে রক্ষা পেতে বহুদূরে গিয়ে বসতি গড়েছেন। এখন তিস্তা মরা খালে পরিণত হওয়ায় প্রচুর চর জেগেছে। চরগুলোতে বিভিন্ন ফসল ফলছে। পরিমল চন্দ্র নামে একজন বলেন- পাঁচ বছর ধরে চরে মিষ্টি কুমড়া চাষ করছি। আট টাকা ভার  শ্রমিক খরচ দিয়ে বালুর মধ্যে মাটি ফেলেছেন। সেই মাটিতে লাগিয়েছেন মিষ্টি কুমড়া।

সর্বশেষ খবর