বৃষ্টি হলেই নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের বেশির ভাগ সড়ক ডুবে যায়। এমনকি পাড়া-মহল্লার রাস্তাসহ বাড়িঘরে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। অনেক সরকারি-বেসরকারি অফিস এলাকা সয়লাব হয় পানিতে। ভোগান্তির শিকার হন শহরবাসী। সম্প্রতি কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে শহরবাসীকে। অথচ কয়েক বছর আগেই শহরে পানি নিষ্কাশন প্রকল্পের জন্য সৈয়দপুর পৌরসভা ১০ কোটি টাকা ব্যয় করে। দাতা সংস্থার অর্থায়নে ওই প্রকল্পের অধীন প্রায় ২০ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়। এ প্রকল্পের কোনো সুফল পাচ্ছেন না নগরবাসী। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলেই সৈয়দপুর পৌর শহরের কর্মব্যস্ত শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক, শহীদ ডা. শামসুল হক সড়ক, শহীদ জহুরুল হক সড়ক, শেরে বাংলা সড়কসহ শহরের অলিগলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তখন বাঁশবাড়ী, মিস্ত্রিপাড়া, হাতিখানা, গোলাহাট, কাজীহাট, হাওয়ালদারপাড়া আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েন। অনেক বসতবাড়িতে হাঁটুপানি উঠে যায়। বৃষ্টির পানি আবাসন এলাকাসহ অলিগলি রাস্তা থেকে নামতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। স্থানীয় নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা রুহুল আলম মাস্টার বলেন, শহরের অধিকাংশ পানি নিষ্কাশনের ড্রেন জবরদখল হয়ে গেছে। এসব ড্রেনের ওপর বহু পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এগুলো দখলমুক্ত না করায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কয়েক বছর আগে জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরসভা ১০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রকল্পের ড্রেন দিয়ে দৃশ্যত কোনো পানি নিষ্কাশন হয় না। বর্তমান পৌর মেয়রকেও কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। সমস্যা রয়েই গেছে। মিস্ত্রিপাড়া সাদরা লেন মহল্লার বাসিন্দা আবদুল খালেক বলেন, এ এলাকায় রেলওয়ের কয়েকটি খাল ছিল। এসব খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন হতো। প্রভাবশালীরা খাল দখল করে বাড়িঘর গড়ে তুলেছেন। এ কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই বাড়িঘর, রাস্তা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তখন মহল্লাবাসীকে ময়লা-আবর্জনা ভরা পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হয়। তার দাবি, জনদুর্ভাগ অবসানে খাল খনন ও দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন পৌর কর্তৃপক্ষের। সৈয়দপুর পৌর মেয়র রাফিকা আকতার জাহান জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পানি নিষ্কাশনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।