বৈরী আবহাওয়া আর কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ফসল ও মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভেসে গেছে ৮ শতাধিক পুকুর ও বিলের মাছ। ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর খেতের ফসল। নওগাঁয় ফসলের খেত নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিনিধিদের খবর- চাঁপাইনবাবগঞ্জ : জেলার মাছ চাষি ও কৃষকরা টানা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মাছ চাষিদের দাবি, পুকুর ও বিলে বিভিন্ন কৌশলে ঘের দিয়েও মাছ রক্ষা করা যায়নি। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকে টানা চার দিনের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে শিবগঞ্জ উপজেলায়। এছাড়া সদর, নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলায় পুকুর ও বিল থেকে বিপুল পরিমাণ মাছ ভেসে গেছে। ৮ শতাধিক পুকুর-বিল থেকে মাছ ভেসে গেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে বিভিন্ন সূত্র থেকে। সূত্রমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার মহাডাঙ্গা বিল থেকে প্রায় ১০০ মণ মাছ ভেসে গেছে। নাচোল উপজেলার নেজামপুরের মাছ চাষি শফিকুল ইসলাম জানান, তার ১৩ বিঘার পুকুর থেকে প্রায় ১৫-২০ মণ মাছ ভেসে গেছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, জেলায় কি পরিমাণ পুকুর বা বিল ভেসে মাছ বেরিয়ে গেছে তা বিভিন্ন উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তারা খোঁজ নিচ্ছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাব মতে জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমি চার দিনের বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে।
নওগাঁ : জেলায় শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছের গোড়া পচে যাওয়ায় পঁচামিনা রোগ হওয়ায় কীটনাশক দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে বলে জানিয়েছে চাষিরা। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় সবজির খেতে পানি না জমলেও মাটিতে রস বেড়েছে। এতে গাছ মরে যাওয়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে গোড়ায় পচন রোগ। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। বিশেষ করে আগাম জাতের ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, বেগুন, লালশাক, টমেটো ও পেঁপেসহ অন্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা আর্থিকভাবেও ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। বৃষ্টিতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি চাষিদের। সবজির খেত নষ্ট হলে উৎপাদন কম হবে। দামও ঊর্ধ্বমুখী হবে। জেলা কৃষি কর্মকর্তা মনজুরে মাওলা বলেন, কয়েকদিনে জেলায় গড় ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ১৪৬ হেক্টর জমির শাক-সবজি আক্রান্ত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।