কক্সবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন তামাকখেত। কয়েক বছর আগেও বাঁকখালী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর তীর ও কূলঘেঁষে বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা মিলত শাকসবজি খেত। অথচ চলতি শুষ্ক মৌসুমে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করেছেন কৃষকরা। শুধু কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের অন্তত ৯টি ইউনিয়নে তামাক চাষ করা হয়েছে। দেড় যুগ ধরে তামাকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলায় নিয়োজিত একটি বেসরকারি সংস্থার দাবি, এ এলাকায় তামাকের আগ্রাসন চলছে। এদিকে তামাক শোধনের জন্য জ্বালানি সংগ্রহ করতে গিয়ে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল। ওই সময় নিকোটিনের গন্ধে স্বাভাবিকভাবে শ্বাসও নিতেও কষ্ট হয় এলাকার মানুষের। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চকরিয়ায় ৬২০ হেক্টরের অধিক ও রামুতে ১৭০ হেক্টরের অধিক জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। যেসব জমিতে শীতকালীন শাকসবজি আবাদ হতো, এখন তার অধিকাংশ জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। বাঁকখালী নদীর পাশে রাজারকুল, মৈষকুম, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়ার নাপিতের চর, কাউয়ারখোপ, মনিরঝিল, ফাক্রিকাটা এলাকায় তামাক চাষ হয়েছে। ওই এলাকার ফসলি জমিগুলোও তামাকের দখলে। স্থানীয়রা বলছেন, উৎপাদিত তামাক শোধনের জন্য জ্বালানি সংগ্রহ করতে গিয়ে উজাড় করা হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, কাটা পড়ছে ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগানের লাখ লাখ গাছও। তামাক প্রক্রিয়াজাত হওয়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, তামাকপাতা শোধনের কাজ শুরু হলে নিকোটিনের গন্ধে দুঃসহ অবস্থা তৈরি হয়। স্বাভাবিকভাবে শ্বাসও নিতে পারে না এলাকার মানুষ। এ ছাড়াও শোধনের সময় জমিতে পড়ে থাকা তামাকপাতার উচ্ছিষ্ট ও তামাক গাছ বর্ষা মৌসুমে নদীতে গিয়ে পড়ে। এতে নদীর পানির দূষণ হয়। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বমু বিলছড়ি, সুরাজপুর, মানিকপুর, কাকারা, ফাঁসিয়াখালী ও লক্ষ্যারচরে বেশি তামাক চাষ হচ্ছে। কাকারা ইউনিয়নে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ৮০ শতাংশ জমি তামাক চাষের আওতায় রয়েছে। সুরাজপুরের তামাক চাষি দিদারুল আলম জানান, তামাক পোড়াতে প্রতি মৌসুমে একেকটি চুল্লিতে অন্তত ৪০ হাজার কেজি তামাক শোধন করা যায়। প্রতি চুল্লিতে কাঠ পোড়াতে হয় অন্তত সাড়ে ৩ লাখ কেজি। এসব কাঠ বন থেকে সংগ্রহ করা হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উবিনীগ কক্সবাজারের সমন্বয়ক মো. জয়নাল আবেদীন খান বলেন, তামাক চাষের কারণে যেমন জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে, তেমনই চাষি এবং পরিবারের সদস্যসহ আশপাশের মানুষ প্রতি বছর নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাছিম হোসেন বলেন, তামাকের ভয়াবহতা অনুভব করে আমরা চেষ্টা করেছি নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে তামাক চাষীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে। বন কর্মকর্তা মো. মারুফ হোসেন বলেন, যেসব সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সমতল ও টিলা শ্রেণির ভূমিতে তামাক আবাদ হচ্ছে তা অভিযানের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। বনাঞ্চল উজাড় করে কাউকে জ্বালানিও সংগ্রহ করতে দেওয়া হবে না।
শিরোনাম
- শিশু আছিয়া ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন তিন চিকিৎসক
- ‘২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’, অডিওটি শেখ হাসিনার
- তরুণ প্রজন্মকে প্রকৃত রাজনীতি ও সমাজ ব্যবস্থায় ফিরতে হবে: এ্যানি
- আইন মন্ত্রণালয় দ্রুত সময়ে মতামত না দেওয়ায় ইশরাকের গেজেট প্রকাশ ইসির
- চিন্ময় দাসের জামিন হাইকোর্টে
- ‘পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষি করব, তাদের চটাব না’
- বগুড়ায় হত্যা মামলায় দুজনের ফাঁসি
- অভিনেতা সিদ্দিক ৭ দিনের রিমান্ডে
- বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার
- অভিবাসন সাংবাদিকতার উন্নয়নে ‘মার্সেই সনদ’ সই
- নরসিংদী কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু
- ইটভাটার কালো ধোয়ায় কৃষকের স্বপ্ন পুড়ে ছাঁই
- লক্ষ্মীপুরে দখল-দূষণে বিপন্ন খাল ও নদী উদ্ধারে অভিযান
- ‘শ্রমিক-মালিকের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে শ্রম আইন সংশোধন করা হচ্ছে’
- রাজবাড়ীতে যুবকের মরদেহ উদ্ধার
- আতিকুল-মামুনসহ ৫ জন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার
- মারীখালি নদীতে ভাসছিল অজ্ঞাত নারীর মরদেহ
- নাটোরে পিকআপের চাপায় বৃদ্ধ নিহত
- বরগুনায় স্বাস্থ্য জনবল বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- টুঙ্গিপাড়ায় তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা উদ্বোধন
তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন
হাসানুর রশীদ, কক্সবাজার
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর