প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা। গতকাল ছিল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস। এই দিবসে শিবলী-নীপার নৃত্যাঞ্চলের উদ্যোগে হয় দিনব্যাপী নৃত্যানুষ্ঠান ও নৃত্যাঞ্চল সম্মাননা প্রদান। এ নিয়ে শামীম আরা নীপার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
আন্তর্জাতিক নৃত্যদিবস উপলক্ষে নৃত্যাঞ্চলের আয়োজন কেমন ছিল?
দিনব্যাপী অনুষ্ঠান নানাভাবে সাজানো হয়েছিল। এটি করেছি মহিলা সমিতির ডা. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে। তিন ভাগে অনুষ্ঠানটি সাজিয়েছিলাম। প্রতি বছরের মতো এবারও আন্তক্লাস পুরস্কারের আয়োজন ছিল। যেটা ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত হয়। আর নৃত্যাঞ্চলের প্রাণপুরুষ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর স্মরণে প্রতি দুই বছর অন্তর প্রদান করে থাকি নৃত্যাঞ্চল পদক, যেটি এবার পেয়েছেন ধামাইল নৃত্যের গুণীজন শ্রীমতী কুমকুম রানী চন্দ। যার বয়স এখন ৮৪ বছর। সর্বশেষ ভাগের আয়োজন ছিল বিশ্ব নৃত্য দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের কালচার ও ট্র্যাডিশনাল নৃত্য নিয়ে পরিবেশনা।
নৃত্যাঞ্চল নিয়ে আগামীর পরিকল্পনা?
এটিকে ঘিরে আমাদের রয়েছে নানারকম পরিকল্পনা। সামনে নতুন কিছু প্রোডাকশন করার পরিকল্পনা রয়েছে। কিছু গবেষণামূলক লোকনৃত্য মঞ্চায়িত করার পরিকল্পনা রয়েছে। রয়েছে নৃত্যাঞ্চলের উদ্যোগে নিয়মিত নৃত্য কর্মশালা করার। আসলে সব সময় যা করি নৃত্যাঞ্চলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, সেটাই করার পরিকল্পনা থাকে। নতুন প্রজন্মকে একটি সুন্দর প্ল্যাটফরম প্রদান, আমাদের দেশের নিজস্ব স্বকীয়তাকে বহির্বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। যদিও এখন নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সম্ভব হয়ে উঠছে না। এর মধ্যে পৃষ্ঠপোষকতার অভাব প্রধান। আর সরকারি অনুষ্ঠানে নৃত্যকে যদি সঠিকভাবে তুলে ধরা হয়, তাহলে নৃত্যশিল্পীরা উৎসাহ পাবে।
নৃত্যাঞ্চল নিয়ে যে স্বপ্নগুলো দেখেছিলেন, সেগুলোর অগ্রগতি?
আসলে নৃত্যাঞ্চল আমার স্বপ্নের দল। আমার সন্তানের মতো। আমি আর শিবলী অনেক স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। একসময় এটিতে প্রায় ১০০০ স্টুডেন্ট ছিল। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় ও সমস্যায় ঝরে গিয়ে এখন স্টুডেন্ট সংখ্যা রয়েছে মাত্র ৪০০ জন। আমাদের নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। আমরা এখন দুটি স্থান ভাড়া নিয়ে স্কুলটি চালাচ্ছি, যেটি খুবই কষ্টসাধ্য। আবার ৫টা বাজলেই স্কুল পাওয়া যায় না। তাই আমাদের নিজস্ব একটি জমি প্রয়োজন। এটি শুধু আমাদের চাহিদা নয়, হাজার হাজার শিক্ষার্থীর চাহিদা। একখণ্ড জমির ওপর আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই একটি আন্তর্জাতিক মানের ডান্স স্কুল। জানি না, কবে এই স্বপ্ন পূরণ হবে!
নৃত্যকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়াটা কি জরুরি?
আমি মনে করি, যে কোনো নান্দনিক শিক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে নৃত্যকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, লেখাপড়ার অন্যান্য বিষয়ের মতো এটার প্রতিও যেন সবাই মনোযোগী হয়। তবে আশার কথা, এখন পাঠ্যপুস্তকে প্রাইমারি লেভেলে শিল্পকলাকে সাবজেক্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেখানে রয়েছে নাচ, গান, চিত্রকলা ও অভিনয়। এটির মূল্যায়ন কমিটির মেম্বার হিসেবে আমিও কাজ করেছি। তবে দুঃখের বিষয়, কোনো প্রপার শিক্ষক নেই।
নাচে পেশাদারি নিয়ে অভিমত?
নাচে এখন পেশাদারির জায়গা তৈরি হয়েছে। সবার মধ্যে নাচ শেখার আগ্রহ তৈরি হওয়ায় স্কুলের সংখ্যাও বেড়েছে।
এ সময়ের ফিউশনধর্মী নাচ মন্তব্য?
আপনাকে অনেক পরিশ্রম ও সাধনা করতে হবে। আবার নাচের নির্দিষ্ট পোশাক ও সাজ রয়েছে। এগুলো কি যথাযথ মানা হয়?