ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিতে সরগরম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ধানের মোকাম। দেশের পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এ মোকামে উঠতে শুরু করেছে নতুন বোরো ধান। দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আবার সচল হয়েছে জেলার প্রায় আড়াই শ চালকল। আশুগঞ্জ উপজেলায় মেঘনা নদীর পাড়ে শত বছরের বেশি সময় ধরে বসছে ধানের হাট। এটি পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মোকাম হিসেবে পরিচিত। এ মোকাম ঘিরেই গড়ে উঠেছে জেলার চালকলগুলো। ধানের মৌসুমে প্রতিদিন অন্তত ১ লাখ মণ কেনাবেচা হয় এখানে। অন্য সময় তা অর্ধেকে নামে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চালকলগুলোর চাহিদা মেটাতে মেঘনাপাড়ের এ হাট ছাড়াও ধান আনতে হয় অন্য মোকাম থেকেও।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চালকল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে প্রতিদিন অন্তত ১০ কোটি টাকার চাল সরবরাহ করা হয়। এখান থেকে সবচেয়ে বেশি পাঠানো হয় বিআর-২৯ ও বিআর-২৯ জাতের চাল। এ দুটি জাত মূলত চিকন চালের। মোটা ধান থেকে করা চাল মিলাররা সরবরাহ করেন সরকারি গুদামে। জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে আশুগঞ্জ মোকামে ধান সংকট দেখা দেয়। ফলে চালের বাজারও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। গত মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মোকামে নতুন ধান উঠতে শুরু করে। ধীরে ধীরে বাড়ছে ধানের সরবরাহ। ফলে চালের দামও কমবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের ব্যবসায়ী হাতেম আলী জানান, হাওরের ধান এখনো পুরোপুরি কাটা শেষ হয়নি। বর্তমানে তারা ভেজা ধান নিয়ে আসছেন মোকামে। আগামী সপ্তাহ থেকে শুকনা ধান আসবে। সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ী মঈন মিয়া জানান, ধানের সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। ধান ভেজা হওয়ায় চালকল মালিকরা কিছুটা কম কিনছেন।
শুকনা ধান এলে বেচাকেনা আরও জমজমাট হবে। ধানের সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় আবারও সচল হয়েছে চালকলগুলো। যদিও পুরোদমে চাল উৎপাদন শুরু করতে আরও কিছুদিন লাগবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আশুগঞ্জের এমপি এগ্রোফুডের ব্যবস্থাপক হাসান জানান, ধানের অভাবে দুই মাস চালকল বন্ধ রাখতে হয়েছিল। বর্তমানে প্রতিদিন ৬০-৭০ টন চাল উৎপাদন হচ্ছে। ধানের সরবরাহ বাড়লে চাল উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।