বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা পরিষদসংলগ্ন বান্দাঘাটা থেকে রাজৈর মারকাজ মসজিদ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটিতে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। বর্ষায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে হাঁটুপানি। কর্দমাক্ত হয়ে যায় পুরো রাস্তা। শুষ্ক মৌসুমে যানবাহন চলাচলের সময় ধুলোয় আচ্ছন্ন হয় এলাকা। চলছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। শরণখোলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও রায়েন্দা-রাজৈর ফাজিল মাদরাসার পরীক্ষা কেন্দ্র দুটি এ সড়কের পাশে অবস্থিত। পরীক্ষার্থীদের চলাচলেও চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। কাদাপানি মাড়িয়ে কেন্দ্রে যেতে হয় তাদের। সড়কটি এখন স্থানীয়দের ‘গলার কাঁটা’। শরণখোলা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নূরুল আলম ফকির ও রায়েন্দা-রাজৈর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল জলিল আনোয়ারী বলেন, সড়কটি দুই কিলোমিটার হলেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কমপক্ষে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। শুষ্ক মৌসুমে ভাঙাচোরা সড়কের ধুলোবালি মাড়িয়ে কোনোরকম চলাচল করা গেলেও বর্ষায় তাদের কষ্টের শেষ থাকে না। বৃষ্টি হলে বড় বড় গর্তে পানি জমে থাকে। তখন কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ারও উপায় থাকে না। বর্ষার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী উপস্থিতিও কমে যায়। জনদুর্ভোগ নিরসনে সরকারের কাছে সড়কটি দ্রুত পাকা করার দাবি জানান তিনি।
শরণখোলা উপজেলা প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম বলেন, বান্দাঘাটা থেকে রাজৈর মারকাজ মসজিদ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়কের একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলে দ্রুত নির্মাণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। জানা যায়, সড়কের এই দুই কিলোমিটার অংশ বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের আওতাধীন। বাঁধের এ অংশটি আগে এলজিইডির মাধ্যমে কার্পেটিং সড়ক ছিল। ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় উপকূলয়ীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মাণ হয় শরণখোলা উপজেলার ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। সেই সঙ্গে কলেজ রোড হিসেবে পরিচিত সড়কের এ অংশটিও মাটি ফেলে উঁচু করা হয়। আর পাকা না হওয়ায় তখন থেকেই চলছে জনভোগান্তি।
এলাকাবাসী জানান, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী চলাচল করেন। সড়কের আশপাশে রয়েছে তিনটি বরফ কল, একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, কয়েক হাজার পরিবার ও অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সাধারণ মানুষ এবং পণ্য ও যাত্রীবাহী বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। উপজেলা পরিষদ এবং রায়েন্দা বাজারে দৈনন্দিন প্রয়োজনে যাতায়াতে অনেকে ব্যবহার করেন এ রাস্তা। তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।