টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, মধুপুর ও সখীপুর উপজেলায় হলুদের চাষ বাড়ছে। কৃষক বলছেন, হলুদ চাষ অন্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভজনক। অল্প জমিতে কম খরচে অধিক হলুদ চাষ করা যায়। পাহাড়ি এলাকায় সাথিফসল হিসেবে হলুদের চাষ হয়ে থাকে। হলুদ চাষে নিয়মিত পরিচর্যার দরকার হয় না। গরু, ছাগল ও পোকামাকড়ের কোনো উপদ্রব নেই, ফসলহানির আশঙ্কাও কম। পরিত্যক্ত জমিতে হলুদের চাষ ভালো হয়। বাজারে হলুদের চাহিদা অনেক, দামও অন্য ফসলের চেয়ে ভালো। এ কারণে ঘাটাইল, মধুপুর ও সখীপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে হলুদের আবাদ বাড়ছে।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২ উপজেলায় ৩ হাজার ২০৮ হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ করা হয়েছে। ঘাটাইল, মধুপুর ও সখীপুরে হলুদের আবাদ বেশি হয়েছে।
সরেজমিন জানা যায়, মধুপুরের জয়নাতলী, ভুটিয়া, অরণখোলা, বেরিবাইদ, কুড়াগাছা, মমিনপুর, মির্জাবাড়ী, গাছাবাড়ী এলাকায় হলুদ চাষ হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলে এ বছর ৯৮০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এ বছর মধুপুরে প্রায় ৫৮ কোটি টাকার হলুদ বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন কৃষক।
মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ী গ্রামের হলুদ চাষি ছানোয়ার হোসেন, শেফালী বেগম, আক্তার হোসেন, নজরুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, প্রতি বিঘায় সব মিলিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রতি বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মণ হলুদ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। বাজার মূল্য আশানুরূপ পাওয়া গেলে বিঘাপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন তাঁরা। ভবানীটিকি গ্রামের বাপ্পি জানান, হলুদের কন্দ রোপণের পর পরিপক্ব হতে জাতভেদে ৭ থেকে ১০ মাস লাগে। সার ও কীটনাশকও ব্যবহার করতে হয় খুবই কম। মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা জানান, হলুদ সাথিফসল হিসেবে কৃষক আবাদ করে থাকেন। হলুদের কন্দ রোপণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত কৃষককে পরামর্শ দেওয়া হয়। টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন জানান, জেলার ১২ উপজেলায় এবার ৩ হাজার ২০৮ হেক্টর জমিতে হলুদের আবাদ হয়েছে। জেলায় হলুদের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে এবং বাজারে দাম ভালো থাকলে কৃষক লাভবান হবেন।