জুয়েলারি দোকান থেকে ৫ ভরি স্বর্ণের গহনা নিয়ে পালিয়েছে এক প্রতারক। নিজেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে পরিচয় দেন ওই ব্যক্তি। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে প্রতারকের ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত করেছে। তবে তাকে এখনো আটক করতে পারেনি।
মাগুরা পুলিশ সুপার এ কে এম এহসান উল্লাহ জানান, মাগুরা কালেক্টরেট কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি)-এর কাছে রবিবার দুপুরে এসে নিজেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পরিচয় দেয় ওই ব্যক্তি। জেলা প্রশাসন প্রটোকল অনুযায়ী তাকে মাগুরা সার্কিট হাউজে কক্ষ বরাদ্দ দেয়। নিজের ব্যবহৃত গাড়ির ড্রাইভারসহ প্রতারক খোরশেদ আলম বেশ কিছু সময় সার্কিট হাউজে অবস্থান করেন। পরে এক আত্মীয়ের বিয়ের জন্য সোনার গহনা কেনার কথা বলে শহরের সৈয়দ আতর আলী সড়কে মওলানা মাকের্টে ওহিদুর রহমানের বিউটি জুয়েলারিতে যান। সেখানে গিয়ে খাঁটি সোনার গহনা কেনার কথা বলে নিজ মোবাইল থেকে এনডিসি রবিউল ইসলামকে দিয়ে দোকানীকে ফোন করান। এনডিসি রবিউল সোনার দোকানী ওহিদুর রহমানকে মোবাইল ফোনে স্যারকে ভালো ডিজাইনের খাটি সোনার গহনা দিতে বলেন। এ সময় বিভিন্ন ধরনের ৫ ভরি সোনার গহনা নিয়ে দোকনীকে খোরশেদ আলম বলেন, ‘ব্যাংক বন্ধ থাকায় সব টাকা কাছে নেই। ম্যাডামের (স্ত্রী) কাছ থেকে টাকা আনতে রেস্ট হাউজে যেতে হবে’। এ কথা বলে তিনি গহনাসহ দোকানীকে নিয়ে নিজের গাড়িতে ওঠান। এরপর শহরের টিটিডিসি পাড়ায় সড়ক বিভাগের রেস্ট হাউজে গিয়ে একই পরিচয়ে একটি কক্ষে ওঠেন। সেখানে দায়িত্বরত পিয়নকে ডেকে কফি দিতে বলেন ও তার স্ত্রী পাশের রুমে আছেন জানিয়ে টাকা আনার কথা বলে গহনাসহ সটকে পড়েন।
এদিকে, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর খোরশেদ আলম ফিরে না আসায় দোকানী ওহিদুর রহমান পিওনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, এখানে যুগ্ম সচিব পরিচয়ে শুধু ওই ব্যক্তিই এসেছেন। কোন ম্যডাম নেই। এসময় খোঁজাখুঁজি করে প্রতারক ওই ব্যক্তিকে আর খুঁজে না পাওয়ায় প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে ও রাতে এনডিসির সহায়তায় পুলিশকে ঘটনাটি জানান ভুক্তভোগী দোকানী।
পুলিশ সুপার একেএম এহসান উল্লাহ এ বিষয়ে আরও জানান, রবিবার রাতে এনডিসি ও স্বর্ণের দোকানী বিষয়টি তাকে জানানোর পর শহরে স্থাপিত সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রতারকের ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত হয়েছে। তবে গাড়ির নম্বরটি সঠিক না হওয়ায় তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
স্বর্ণের দোকানী ওহিদুর রহমান জানান, এনডিসি সাহেব মোবাইলে তার স্যারকে ভালো স্বর্ণ দেওয়ার কথা বলেছেন। যে কারণে তিনি প্রতারিত হওয়ার কথা ভাবতে পারেননি।
এনডিসি রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পরিচয়দান দেয়ায় দোকান মালিককে ভালো স্বর্ণ দিতে বলেছি। তবে তাকে বাকি দিতে বা অন্য কোথাও গিয়ে টাকা নিতে বলিনি। খোরশেদ আলম নামে ওই ব্যক্তি ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করেছে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশের সহায়তায় তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
বিডি-প্রতিদিন/ ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা