হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামে দুই পঞ্চায়েতের বিরোধকে কেন্দ্র করে চার শিশু হত্যার ঘটনায় কারাগারে থাকা দুই আসামি সাহেদ ও সালেহ আহমেদের জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সুন্দ্রাটিকি গ্রামে ৪ শিশুকে হত্যার অন্যতম দুই আসামির জামিন আবেদন করেন তাদের আইনজীবী। শুনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারক হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলম তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগে মঙ্গলবার আব্দুল আলী বাগাল, আরজু মিয়া, জুয়েল মিয়া ও রুবেল মিয়ারও জামিন নামঞ্জুর করেন এই আদালত।
আসামি সাহেদ ১৬৪ ধারায় ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়াও সালেহ আহমেদকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন এবং তার সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন। আসামিদের মধ্যে আরজু মিয়া, জুয়েল মিয়া ও রুবেল মিয়া ইতোমধ্যে ১৬৪ ধারায় ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আব্দুল আলী বাগালও ১০ দিনের রিমান্ড শেষে বর্তমানে কারাগারে আছেন। তাকেই ঘটনার মূল নায়ক হিসাবে চিহ্ণিত করা হয়েছে। র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে চুনারুঘাটে নিহত হয়েছেন বাচ্চু। আসামি বিল্লাল মিয়া, উস্তার মিয়া ও বাবুল মিয়াকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার পুত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজের পুত্র তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার পুত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের পুত্র ইসমাঈল হোসেন (১০) নিখোঁজ হয়। ওই দিন বিকেল বেলা তারা উত্তর ভাদেশ্বর গ্রামে ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছিল। এ ব্যাপারে পরদিন ওয়াহিদ মিয়া বাদী হয়ে বাহুবল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে বাহুবল মডেল থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন নিখোঁজ এক শিশুর পিতা। এই ঘটনার পর পুলিশের একাধিক টিম ও র্যাব মাঠে নামে ওই শিশুদের অনুসন্ধানে। ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে নিখোঁজ শিশুদের সন্ধানদাতাকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা করা হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের দিন মজুর কাজল মিয়া প্রতিদিনের ন্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে করাঙ্গী নদীর পাশে মাটি কাটতে গিয়ে মাটি চাপা অবস্থায় ৪ শিশুর লাশ দেখতে পান। পরে লাশগুলো উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন রাতে দাফন করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/১০ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ