দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে পুলিশ প্রহরাতে থাকা মেহেরপুর পৌর মেয়র মোতাছিম বিল্লাহ মতুকে কাফনের কাপড় ও চিরকুট পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। গতকাল একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এ হুমকি বার্তা পাঠানো হয়। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার জিগাতলা থেকে রনি নামের এক ব্যক্তি এ হুমকি পাঠান। খামের ওপর প্রেরকের ১২ ডিজিটির গ্রামীণফোনের একটি মোবাইল নম্বার দেয়া আছে। আর খামের ভেতর একটি সাদা কাফন ও ভেতরে পৃথক খামে হত্যার হুমকিসম্বলিত চিরকুট আছে।
চিরকুটে লেখা আছে 'মতু তোমায় সালাম। হে মেহেরপুরের মেয়র, আগামী রোজার ঈদ তোমার জীবনের শেষ ঈদ। ওইদিন ঈদগাতেই তোমাকে মেরে ফেলা হবে। আর ওইদিনই তোমার জানাজা হবে ওই মাঠে। উপরে গিয়ে মেয়র গিরি করবা। কোনো নিরাপত্তা পুলিশ দিতে পারবে না। সেই ব্যবস্থা আমরা করব। এমপিকে টাকা দিয়েছো তা তোমার কোনো কাজে লাগবে না। তোমার কাউন্সিলররাও আমাদের সঙ্গে জড়িত। তুমি কোথায় যাবা, কাফন পাঠিয়ে দিলাম। সালাম হে মেয়র তোমায়। আমাদের কার্যক্রম প্রায় শেষ। তোমার লোকজনই তোমাকে ঈদ গায়ে মারবে। শেষ ইবাদত করে নাও। এসপি পুলিশ তোমার নিরাপত্তা দিতে পারবে না। তুমি বাড়িতেও পুলিশ বসাও। তো কী হবে? মৃত্যু তোমার আসবে। তো দেখতে থাকো। সাংবাদিক সম্মেলন করে বদনাম দাও। তো অপেক্ষায় তুমি থাকো। আমরাও থাকি। দেখা হবে ওই দিন। ঈদগায়ে।'
এ ব্যাপারে মেয়র মোতাছিম বিল্লাহ মতু বলেন, 'সকালে ঢাকা থেকে অফিসে এসেই সুন্দরবন কুরিয়ারের খাম খুলে কাফনের কাপড় ও হুমকির চিঠি পায়। মেহেরপুর পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।' সদর থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
মেহেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হামিদুল আলম বলেন, 'হুমকির বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে হুমকির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে।'
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দাবি করছেন, মেয়র নিজেই ঢাকা থেকে নিজেকে হত্যার হুমকিসম্বলিত কাফনের কাপড় পাঠিয়ে নিজের নিরাপত্তা জোরদার করতে চাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, কাউন্সিলর থেকে ১৯৯৩ সালে মেয়র নির্বাচিত হন মতু। বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে মতু ২০০৭ সালের ৮ জুন যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হন। ১৯৯৯ সালে ফের মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০০ সালে তিনি ছুরিকাঘাতে আহত হন।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ জুন ২০১৬/শরীফ