মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক রিকশা চালকের কাছ থেকে ২০০ টাকা উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগে রাজিব হোসেন নামের এক ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবলকে ক্লোজড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২১ রাতে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান জানান, পুলিশ কনস্টেবল রাজিব হোসেন ও রিকশা চালক শফিক মিয়াকে মুখোমুখি করা হলে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় পুলিশ কনস্টেবলকে শ্রীমঙ্গল থানা থেকে ক্লোজড করে মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল শহরের বিরাইপুর এলাকার বাসিন্দা রিকশা চালক শফিক মিয়া (২২) জানান, গত বুধবার ২০ জুলাই দুপুরে শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ রোড দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে দাঁড়ানোর জন্য হাত দেখায়। শফিক মিয়া রিকশা দাঁড় করালে পুলিশ উৎকোচ দাবি করে এবং না দিলে রিকশাসহ থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন।
এ সময় রিকশা চালক তার কাছে সর্বসাকুল্যে থাকা ১৫০ টাকা পুলিশকে দিলে পুলিশ অসন্তুষ্ট হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। পরে রিকশা চালক শফিক মিয়া তার পরিচিত অন্য রিকশা চালকের কাছ থেকে ৫০ টাকা ধার করে এনে মোট ২০০ টাকা পুলিশের হাতে দিয়ে ছাড়া পান।
শ্রীমঙ্গলের স্থানীয় সাংবাদিক দীপংক্র ভট্টাচার্য লিটন বলেন, সকালে চাল কেনার জন্য একটি রিকশা চড়ে বাজারে গিয়ে চাল কিনে আবার ওই রিকশায় উঠলে রিকশা চালক তাকে কান্না জড়িত কন্ঠে ঘটনাটি জানান। বলেন, পুলিশ টাকা নিয়ে যাওয়ায় তার ঘরে বাজার হয়নি।
লিটন রিকশা চালকের ঘটনাটি শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলীকে অবহিত করলে তিনি তাৎক্ষণিক পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ এর নজরে আনেন।
পরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে থানায় গেলে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীনের উপস্থিতিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাফিক কনস্টেবল রাজিব হোসেনকে ক্লোজড করে মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনে পাঠান। সেই সঙ্গে অসহায় রিকশা চালকের ২০০ টাকা ফেরত দেন অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণ পাওয়ায় অভিযুক্তকে ক্লোজড করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। এ ধরনের ঘটনা ক্ষমার অযোগ্য।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ