বাগেরহাটে বন্যার পানির স্রোতে চিতলমারী উপজেলায় মধুমতি নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদী ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি। গত ৪ দিনে তীব্র ভাঙনে অন্তত ২৫টি বসত বাড়ি, ৫০ বিঘা জমির বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলিন হয়েগেছে। নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শত-শত পরিবার। বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের পরানপুর গ্রাম লাগোয়া মধুমতি নদীর করাল স্রোতে ভাঙনের কবলে পড়ে অন্তত ৫ শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পৈত্রিক ভিটাবাড়ি হারিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। আবার কেউ-কেউ অন্যের জমিতে ও রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছে।
সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছে। এছাড়া মধুমতি নদীর পাড় দিয়ে বয়ে যাওয়া মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটিও ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারানো বিধবা শরীফা বেগম বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই মা-বাবা, দাদীর কবরসহ ৫০টি কবর ও গাছপালা এবং জায়গা জমি সব হারিয়েছি নদী ভাঙনে। বর্তমানে অন্যের বাড়ি থাকি। আমাকে কেউ দেখার নেই। পরানপুর গ্রামের ভাঙনের স্বীকার হাওয়া বেগম. সেকেন্দার, বেলায়েত হোসেন, সৈয়দ আলী, তৈয়ব আলী, আউয়ুব আলী, জাফর শেখ, আলোমতিসহ অনেকেই বলেন, নদীতে ক্ষেত-খামারসহ সব কিছু নিয়ে গেছে। ৪/৫ বার বাড়িঘর সরিয়েও শেষ পর্যন্ত রেহাই মেলেনি। গত ৪ দিনের নদী ভাঙ্গনে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন আতংক।
বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, মধুমতি নদীর অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে পরানপুর গ্রামের প্রায় ৫শ' পরিবার ঘরবাড়ি ও জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। এই ভাঙ্গন থেকে পরিত্রান পেতে প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপ জরুরী।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার পারভেজ বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। তবে নদী ভাঙন ঠেকাতে একনেকে একটি প্রকল্প পাশ হয়েছে। কাজ শুরু হলে মধুমতি নদীর ভাঙন থেকে এলাকাবাসী মুক্তি পাবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৮ আগস্ট, ২০১৬/ আফরোজ